Tiger in Jhargram

বাঘিনির আতঙ্ক ঝাড়খণ্ড সীমানায়! ঘুরতে ঘুরতে ঢুকতে পারে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে, তটস্থ বন দফতর

বিরবাহা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকে বনকর্মীরা সক্রিয়। ওঁরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। নজর রাখা হচ্ছে বাঘটির গতিবিধির দিকেও। পাশাপাশি, সীমানা এলাকার মানুষদের জঙ্গলের দিকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:১৫
Share:

সীমানা লাগোয়া চাকুলিয়া, ঘাটশিলার জঙ্গল থেকে প্রায়ই হাতি ঢুকে পড়ে। এ বার বাঘ ঢুকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

বছর সাতেক আগে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ঢুকে পড়েছিল লালগড়ের জঙ্গলে। পরে একদল শিকারির বল্লম আর টাঙ্গির ঘায়ে প্রাণও গিয়েছিল ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে আসা ওই বাঘটির। সেই আতঙ্কই এ বার ফিরে এল ঝাড়গ্রামের ঝাড়খণ্ড সীমানায়। পড়শি রাজ্যের ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে ফের হাজির হয়েছে ওড়িশা থেকে আসা একটি বাঘিনি। এই পরিস্থিতিতে তটস্থ রাজ্য বন দফতর।

Advertisement

সীমানায় ইতিমধ্যেই কড়া প্রহরা বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকে বনকর্মীরা সক্রিয়। ওঁরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। নজর রাখা হচ্ছে বাঘটির গতিবিধির দিকেও। পাশাপাশি, সীমানা এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের জঙ্গলের দিকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।’’

বন দফতর সূত্রে খবর, বছর তিনেকের প্রাপ্তবয়স্ক ওই বাঘিনি ‘জ়িনত’ সিমলিপালের ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেই এসেছে। অনুমান, সিমলিপাল থেকে গুরবান্দা হয়ে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে গিয়েছে জ়িনত। কয়েক দিন ধরে তাকে জামশেদপুর বন বিভাগের চাকুলিয়া রেঞ্জের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গিয়েছে। এলাকায় কিছু গবাদি প্রাণীর দেহাবশেষ দেখে অনুমান, বাঘের হানাতেই তারা মারা পড়েছে।

Advertisement

ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া ও ঘাটশিলার জঙ্গল থেকে প্রায়ই হাতি ঢুকে পড়ে ঝাড়গ্রামের জামবনি এবং বেলপাহাড়িতে। এ বার বাঘ ঢুকে পড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড এবং বাংলার মধ্যে মাঝেমধ্যে হাতি যাতায়াত করে। ফলে ঝাড়খণ্ড বন বিভাগের সঙ্গে আমাদের ভাল যোগাযোগ রয়েছে। জামবনি, গিধনি ও বেলপাহাড়ি রেঞ্জের ঝাড়খণ্ড সীমানায় আমাদের কড়া নজরদারি রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’’

বন দফতর সূত্রে খবর, গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জ়িনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে (টাইগার রিজ়ার্ভ, সংক্ষেপে বা এসটিআর) আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপে রেখে পর্যবেক্ষণের পরে রেডিয়ো কলার পরিয়ে ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রেই জানা গিয়েছে, জ়িনতের গলায় রেডিয়ো কলার থাকায় জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে তার গতিবিধিতে নজর রাখা হচ্ছে।

যদিও বাঘের এ ভাবে ভিন্‌রাজ্যের জঙ্গলে বিচরণ করা অস্বাভাবিক নয় বলেই জানাচ্ছেন প্রাণী বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের বক্তব্য, নতুন জায়গায় ছাড়া হলে বাঘ বা বাঘিনি সাধারণত নিজের বিচরণক্ষেত্র চিহ্নিত করে নেয়। এমন এলাকা, যেখানে পর্যাপ্ত শিকার ও পানীয় জল পাওয়া যাবে। এ জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তারা। তার পর ৩০-৪০ কিলোমিটার বৃত্তাকারে নিজের এলাকা তৈরি করে নেয়। অনুমান, এ ক্ষেত্রেও তেমনই ঘটছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement