Bibhas Adhikari

সিবিআই দফতরে হাজির সেই বিভাস অধিকারী, নিয়োগ মামলায় ফের কেন তলব ‘পুরনো চরিত্র’কে?

এর আগে বিভাসের বাড়ি এবং আশ্রমে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। বুধবার সিবিআই দফতরে ঢোকার সময় বিভাস জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে তাঁকে কিছু নথি আনতে বলা হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৫২
Share:

বিভাস অধিকারী। —ফাইল চিত্র ।

কলকাতার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম উঠে আসা বীরভূমের নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিভাস অধিকারী। বুধবার দুপুরে তিনি নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন। সিবিআই দফতরে ঢোকার সময় বিভাস জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে তাঁকে কিছু নথি আনতে বলা হয়েছিল। সেই নথি জমা দিতেই তিনি এসেছেন।

Advertisement

নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলাকালীন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতারির পর বিভাসের নামও সেই মামলায় জড়ায়। বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজ সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি ছিলেন বিভাস। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেও পরিচিত ছিলেন। মানিকের গ্রেফতারির পরে পরেই তদন্তকারীদের নজরে এসেছিলেন বিভাস। সেই অর্থে বিভাস নিয়োগ দুর্নীতি মামলার ‘পুরনো চরিত্র’। কিন্তু অনেক দিনই তিনি ছিলেন নিয়োগ মামলার আলোকবৃত্তের বাইরে। তাঁকে নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি তদন্তকারীদেরও। কিন্তু বুধবার আবার তাঁকে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে দেখে বিভিন্ন জল্পনা শুরু হয়েছে।

নিয়োগ মামলার তদন্ত চলাকালীন ১৫ এপ্রিল বিভাসের বাড়ি এবং আশ্রমে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। সেই সময় তাঁর বাড়ি এবং আশ্রম থেকে প্রচুর নথিও উদ্ধার করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর, বুধবার সেই সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। পাশাপাশি, সিবিআইয়ের তরফে বিভাসকে তাঁর আশ্রম সংক্রান্ত কিছু নথিও বুধবার আনতে বলা হয়েছিল। সেই নথি নিয়েই নিজাম প্যালেসে এসেছেন তিনি।

Advertisement

প্রসঙ্গত, শুধু সিবিআই নয়, উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটে বিভাসের একটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডিও। তল্লাশির পর সেই ফ্ল্যাট সিল করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। পরে আবার আবেদনের ভিত্তিতে তা খুলে দেওয়া হয়।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত হুগলির বলাগড়ের প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের মুখেই প্রথম বিভাসের নাম শোনা গিয়েছিল। দুর্নীতিতে বিভাস যুক্ত বলে দাবি করেছেন কুন্তল। বিভাসকে কেন তলব করা হচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলেছিলেন দুর্নীতিতে নাম জড়ানো অন্য এক ‘চরিত্র’ গোপাল দলপতিও। এর পর নলহাটিতে বিভাসের বাড়ি এবং আশ্রমে হানা দিয়েছিল সিবিআই। তাঁকে তলবও করেছিল সিবিআই।

দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পর বিভাস অবশ্য বলেছিলেন, ‘‘২০১৯ সালে আমার একটা দুর্ঘটনা হয়। তার পর থেকে আমি অসুস্থ। গোপাল দলপতিকে আমি চিনি না। কুন্তল কিংবা দলপতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও দিন দেখা হয়নি। চোর-ডাকাতরা বাঁচার জন্য অনেকের নাম করেন। সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।’’ ইডি, সিবিআই তলব করলে তিনি সব রকম সহযোগিতা করবেন বলেও সেই সময় জানিয়েছিলেন বিভাস। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি চাই আসল সত্য প্রকাশ্যে আসুক। ১০০ বার ডাকলে ১০০ বার যাব। ইডি ইতিমধ্যেই তদন্ত করেছে। আমার কাছ থেকে নথি চেয়েছিল। সব পাঠিয়েছি। কোনও কিছু পায়নি। আমার কাছে অবৈধ কিছু নেই।’’ বিভাসের ২-৩টি বিএড কলেজ রয়েছে বলে সেই সময় জানা গিয়েছিল। ‘বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশনের’ প্রেসিডেন্টও ছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন