Kuntal Ghosh

জামিন খারিজ কুন্তলের, আগামী ১৪ দিন থাকতে হবে প্রেসিডেন্সি জেলেই, জানিয়ে দিল আদালত

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল। ওই অর্থ চাকরির প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে কুন্তল নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩০
Share:

শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গত ২০ জানুয়ারি কুন্তলকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ফাইল চিত্র।

জামিন পেলেন না কুন্তল ঘোষ। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শাসকদল তৃণমূলের হুগলির যুবনেতাকে আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। শুক্রবার নগর দায়রা আদালতের বিচারক এই নির্দেশ দেন। ফলে আপাতত ৩ মার্চ পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি জেলেই থাকতে হবে কুন্তলকে।

Advertisement

শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গত ২০ জানুয়ারি কুন্তলকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। চাকরিপ্রার্থীদের থেকে চাকরির প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে টাকা তোলার অভিযোগের পাশাপাশি, হিসাব বহির্ভূত বিপুল অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও ছিল কুন্তলের বিরুদ্ধে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা কুন্তলের চিনার পার্কের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর ইডি গ্রেফতার করে যুব তৃণমূল নেতাকে। ইডি কুন্তলকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার পর, গত ৩ ফেব্রুয়ারি কুন্তলকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছিল আদালত। শুক্রবার আবার তাঁকে ৩ মার্চ পর্যন্ত জেলেই রাখার নির্দেশ দিলেন নগর দায়রা আদালতের বিচারক।

যদিও শুক্রবার কুন্তলের মামলার শুনানিতে কুন্তলের আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন করে চারটি বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রথমত, তাঁর মক্কেলের কাছ থেকে কোনও টাকা পাওয়া যায়নি। ইডি ৩০ কোটি টাকার হদিস পাওয়ার কথা বললেও বাড়ি তল্লাশি করে সেই টাকা পাওয়া যায় নি। দ্বিতীয়ত, দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যে ৬.৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল, তা ২০১১ থেকে চালু রয়েছে। ১২ বছরে ৫০টি অ্যাকাউন্টে সাড়ে ৬ কোটি টাকার লেনদেন অস্বাভাবিক নয়। এটি ইডির তদন্তের আওতায় পড়ে না। এ ব্যাপারে আয়কর দফতর কিছু বললে বলতে পারে। তৃতীয়ত, যে ডায়েরি এবং নথিপত্রের কথা ইডির তদন্তকারীরা তাদের বাজেয়াপ্ত তালিকায় উল্লেখ করেছেন, তাতে কী রয়েছে তা-ও স্পষ্ট করে বলা হয়নি। চতুর্থত, তাপস মন্ডলের বয়ান থেকে কুন্তলের নাম প্রকাশ্যে আসার পর ইডি কুন্তলকে জেরা করেছিল। কুন্তল তাঁদের কাছে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন বলেও জানিয়েছিল। অথচ এখন ইডি বলছে, কুন্তল তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্তের প্রসঙ্গ টেনে এনে কুন্তলের আইনজীবী বলেন, সিবিআইয়ের সঙ্গেও তদন্তে সহযোগিতা করেছেন কুন্তল। জানুয়ারি মাসে তিনি সিবিআই দফতরে যান। ফোনের একটি ভয়েস রেকর্ডিং জমা দেন, যেখানে একজন টাকা চাইছিলেন। তা সত্ত্বেও ইডি এসে কুন্তলকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

শুক্রবার এই যুক্তি দেখিয়ে এবং পরবর্তী কালেও কুন্তল তদন্তে সহযোগিতা করবেন জানিয়ে কুন্তলের জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। কিন্তু ইডি পাল্টা যুক্তি দিয়ে দাবি করে, নবম-দশমের চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ২০ লক্ষ করে টাকা নেওয়ার হয়েছে। এঁদের মধ্যে ৬ জনকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই তদন্তের স্বার্থেই কুন্তলকে জেরা করার প্রয়োজন হতে পারে। শেষ পর্যন্ত আদালত কুন্তলের জামিন খারিজেরই সিদ্ধান্ত নেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন