bjp

নীলবাড়ির লক্ষ্যে মমতা-মোকাবিলা, বঙ্গ বিজেপির বাছাই একাদশ

নীলবাড়ি দখলে দলের নেতাদের কাজে লাগানো হলেও রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, মমতার মোকাবিলায় নামছে বঙ্গ বিজেপি-র বাছাই একাদশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১৮:০৯
Share:

গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ

এক দিকে একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপক্ষে গোটা বিজেপি। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে অনেকেই তাই ‘তৃণমূল বনাম বিজেপি’ না বলে ‘মমতা বনাম মোদী’ লড়াই বলেই অভিহিত করছেন। সেই লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রধান সেনাপতি অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই অমিতের নির্দেশে ভিনরাজ্যের বিজেপি নেতারাও বাংলার ময়দানে নেমেছেন। তবে বাংলার ভোট পরিচালনার লক্ষ্যে অঘোষিত মূল দল তৈরি করে ফেলেছে বিজেপি। নীলবাড়ি দখলে দলের বিভিন্ন নেতাকে কাজে লাগানো হলেও রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘অধিনায়কত্বে’ মমতাকে রুখতে মাঠে নামছে ‘বিজেপি-র বাছাই একাদশ’।

Advertisement

অর্থাৎ, নীলবাড়ি দখলে মমতার মোকাবিলায় ময়দানে নামছে বঙ্গ বিজেপি-র বাছাই একাদশ।

ভোটের ময়দানে মূল স্ট্রাইকারের ভূমিকায় থাকবেন দিলীপই। তাঁর আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকার কথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের। দিলীপ ও মুকুল গোষ্ঠীর মধ্যে যতই দ্বন্দ্ব থাকুক, আপাতত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে তাদের একসঙ্গে চলতে হবে। গত লোকসভা নির্বাচনে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল মুকুলের। এ বারও মমতাকে রুখতে বঙ্গ রাজনীতির অলি-গলি চেনা মুকুলকে ব্যবহার করতে চায় বিজেপি। সেই হিসেবে বিজেপি-র বাছাই একাদশের ফরওয়ার্ডে থাকবেন দিলীপ ও মুকুল।

Advertisement

আরও পড়ুন: ৯ বছর পর গ্রামে ফিরলেন সুশান্ত ঘোষ, নতুন করে উজ্জীবিত সিপিএম

মাঝমাঠ সামলানোর দায়িত্ব যাঁদের উপর, তাঁরা ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছেন। সাংগঠনিক ভাবে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রকে আলাদা আলাদা ‘জেলা’ হিসেবে দেখে বিজেপি। জেলাওয়াড়ি সেই কেন্দ্রগুলিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে পাঁচটি জোন। মেদিনীপুর জোনে দুই মেদিনীপুর ছাড়াও রয়েছে ঝাড়গ্রাম, হাওড়া ও হুগলি জেলার আসনগুলি। কলকাতা জোনে কলকাতা ছাড়া রয়েছে সম্পূর্ণ দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং উত্তর ২৪ পরগনার দমদম লোকসভা এলাকা। নবদ্বীপ জোনে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং দমদম ছাড়া বাকি উত্তর ২৪ পরগনা। রাঢ়বঙ্গ জোনে রয়েছে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বীরভূম জেলার আসনগুলি। আর উত্তরবঙ্গের সব জেলার সব আসন নিয়ে উত্তরবঙ্গ জোন। ওই পাঁচটি জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকা সায়ন্তন বসু (উত্তরবঙ্গ), রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় (রাঢ়বঙ্গ), বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী (নবদ্বীপ), জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো (মেদিনীপুর) এবং সঞ্জয় সিংহ (কলকাতা) সামলাবেন মাঝমাঠ।

মমতাকে রুখতে রাজ্য বিজেপি-র বাছাই একাদশে ডিফেন্সের দায়িত্বে কিন্তু সরাসরি তিন কেন্দ্রীয় নেতা। দীর্ঘসময় রাজ্যের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এর পরে অরবিন্দ মেনন এবং সম্প্রতি অমিত মালব্যকে সহ-পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। কোন পথে হবে ভোটের লড়াই, কখন কী ভাবে আক্রমণাত্মক হবে দল, তা ঠিক করার দায়িত্ব থাকবে এই ত্রয়ীর কাঁধেই। প্রতিরক্ষার শেষ লাইন রাজ্য বিজেপি-র সংগঠন সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। দীর্ঘদিন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দায়িত্ব সামলানো আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ) প্রচারক অমিতাভ গত অক্টোবরেই রাজ্য বিজেপি-তে দায়িত্ব পেয়েছেন। সাংগঠনিক দিক থেকে বিজেপি-তে সংগঠন সম্পাদকের গুরুত্ব বরাবরই বেশি। এই পদাধিকারীরা প্রকাশ্য রাজনীতির বদলে মূলত আড়াল থেকেই কাজ করে থাকেন। সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি— সবেতেই বড় ভূমিকা থাকবে ‘গোলরক্ষক’ অমিতাভর।

তবে রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, দিলীপের টিমের ‘রিজার্ভ বেঞ্চ’ও শক্তিশালী রাখা হচ্ছে। সেখানে থাকছেন রাজ্যের সাংসদ দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরী। থাকছেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তবে বিজেপি-র অন্দরের যা খবর, তাতে রিজার্ভ বেঞ্চেও জায়গা হচ্ছে না দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের। কয়েকমাস আগে রাহুলকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাহুল প্রথমে তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেও আপাতত নীরবই রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন