Advertisement
১১ মে ২০২৪
Sushanta Ghosh

৯ বছর পর গ্রামে ফিরলেন সুশান্ত ঘোষ, নতুন করে উজ্জীবিত সিপিএম

চন্দ্রকোণার সভায় সুশান্ত ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র

চন্দ্রকোণার সভায় সুশান্ত ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দ্রকোণা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:০৫
Share: Save:

দীর্ঘ ৯ বছর পর নিজের বাড়ি, নিজের এলাকা গড়বেতায় ফিরলেন বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডে অভিযুক্ত সুশান্ত ঘোষ। সুপ্রিম কোর্ট জামিনের শর্ত থেকে জেলায় ঢোকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরেই রবিবার চন্দ্রকোণায় ফিরলেন সিপিএম নেতা। এলাকায় ফিরতেই নতুন করে উচ্ছ্বাস দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তবে তাঁর উপর নজর রয়েছে পুলিশ ও সিআইডি-র।

কঙ্কালকাণ্ডে সুশান্তকে সুপ্রিম কোর্ট প্রথম জামিন দিয়েছিল ২০১২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তখন শর্ত ছিল নিজের জেলায় ঢুকতে পারবেন না তিনি। সম্প্রতি সেই শর্ত তুলে নিতেই সিপিএমের তরফে শুরু হয় সুশান্তকে গ্রামে ফেরানোর প্রক্রিয়া। সেই মতো রবিবার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে নিজের গড়ে ফিরলেন সুশান্ত।

রবিবার প্রথমে শালবনিতে যান বাম জমানার মন্ত্রী সুশান্ত। শালবনি থেকে চন্দ্রকোণা পর্যন্ত মিছিল করে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। চন্দ্রকোণা রোড পার্টি অফিসে সম্বর্ধনা দেন দলের স্থানীয় নেতা-নেত্রীরা। এর পর ওই চন্দ্রকোণা রোড পার্টি অফিসের কাছেই একটি রাজনৈতিক জনসভায় যোগ দেন সুশান্ত। এলাকায় ফিরে তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া, ‘‘এক মাসের জন্য বাড়িতে না থাকলে যে কোনও মানুষের কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। আমি তো ৯ বছর পর ঘরে ফিরলাম। ভীষণ ভাল লাগছে।’’

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর উত্তর শোনার অপেক্ষায়, দিঘায় খেজুর রসে চুমুক দিয়ে মন্তব্য দিলীপের

সুজন চক্রবর্তী অবশ্য প্রতিহিংসার জেরে সুশান্তকে আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছেন। এটা নতুন কিছু নয়। অনেকে চেষ্টা করেছিলেন ওঁকে আটকে রাখার। তাঁরা ফেল করেছেন। নবান্নের কাছে মাথা নোয়াননি সুশান্ত।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘উনি নিজের এলাকা ও বাড়িতে আছেন। তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে আসতে পারেন। তাতে শীর্ষ আদালতের শর্তভঙ্গ হবে না।’’

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে বাইক নিয়ে হামলা, নাকতলায় পার্থর ক্লাব ভাঙচুর

যদিও রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, সিআইডি ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা তাঁর উপর নজর রাখছেন। সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য শর্ত ভঙ্গ হচ্ছে কি না, তা-ও লক্ষ রাখা হচ্ছে।

তৃণমূল অবশ্য সুশান্তর ঘরে ফেরাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘কেউ কারও বাড়িতে আসতেই পারেন। আমরা সবাই দলনেত্রীর সভা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি।’’

২০০২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার বেনাচাপড়ায় ৯ তৃণমূল কর্মী নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় তৃণমূল কর্মী শ্যামল আচার্য তাঁর বাবা অজয় আচার্য-সহ ৯ জনের নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন। প্রথমে রাজ্য পুলিশ ও পরে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। সেই তদন্তে নেমে বেনাচাপড়ায় কঙ্কাল উদ্ধার হয় ২০১১ সালের ৫ জুন।

সেই ঘটনাতেই নাম জড়ায় সুশান্তর। মাস দু’য়েক পর ১১ অগাস্ট তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের বছর ৩ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় না ঢোকার শর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরেই নিজের খাসতালুকে ফিরলেন সুশান্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sushanta Ghosh CPM Benachapra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE