Coal Crisis

Coal Crisis: কয়লার বকেয়া মেটাতে কেন্দ্রের চিঠি, ক্ষুব্ধ রাজ্য

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০৮
Share:

প্রতীকী চিত্র।

দেশজোড়া কয়লা-সঙ্কটের মধ্যে ওই জ্বালানি খাতে বকেয়া অর্থ মেটাতে বলে কেন্দ্র চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকারকে। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎসচিব অলোক কুমার কয়েক দিন আগে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে চিঠি দিয়ে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা বকেয়া মেটাতে অনুরোধ করেছেন। এতে রাজ্য সরকারের একটি অংশ যারপরনাই ক্ষুব্ধ। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বক্তব্য, তীব্র কয়লা-সঙ্কট থেকে নজর ঘোরাতেই এই পদক্ষেপ। সাম্প্রতিক অতীতে কয়লা কেনার পরে সময় ও নিয়ম মেনে মাসিক কিস্তির পুরো টাকাই মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগের বকেয়া টাকাও অন্যান্য রাজ্যের মতো প্রচলিত নিয়ম মেনেই মেটানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে বকেয়ার বেশ কিছু টাকা মিটিয়েও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

১৮ অগস্ট মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎসচিব জানিয়েছেন, দেশে আর্থিক গতিবিধি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে। বিদ্যুতের চাহিদার সব চেয়ে বেশি অংশ মেটে কয়লা-নির্ভর তাপবিদ্যুৎ থেকে। তাই রাজ্যগুলির উচিত, সব বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার পর্যাপ্ত জোগান নিশ্চিত করা। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎসচিবের সংযোজন, রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের কাছে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২১৮২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই অর্থ সময়মতো না-মেটালে কয়লার জোগানে সমস্যা হতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যকে বকেয়া মেটানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

রাজ্য প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নিগম তাদের নিজস্ব পাঁচটি খনি থেকেই এখন প্রায় ৭০% কয়লার চাহিদা মেটায়। বাকিটা নেয় কোল ইন্ডিয়া থেকে। এতে মাসে নিগমের খরচ হয় ২০০ কোটি টাকার কিছু বেশি। সেই টাকা ৬০ দিন পরে মেটাতে হয় নিগমকে। কয়েক বছর ধরে সেই টাকার কিছুই বকেয়া রাখা হয়নি বলে ওই সূত্রের দাবি। ঠিক সময়েই মাসিক কিস্তিতে সেই টাকার পুরোটাই মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিগম আগে যখন কোল ইন্ডিয়ার কাছ থেকে প্রায় ৮০% কয়লা নিত, তখনকার বকেয়াও কিস্তিতে মেটানো হচ্ছে প্রচলিত প্রথা মেনেই। সূত্রের ব্যাখ্যা, নিগম যদি ১০০ টাকা মেটায়, তা হলে বর্তমানে মাসিক বিল মেটাতে প্রায় ৭০ টাকা খরচ হয়। বাকিটা খরচ হয় বকেয়ার অংশ মেটাতে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যেও এই প্রথাই চলে।

Advertisement

বস্তুত, দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্যুৎ সঙ্কট নিয়ে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকেই দোষারোপ করেছে। কেন্দ্রের শীর্ষ সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, বেশির ভাগটাই রাজ্যের তৈরি করা সঙ্কট । কিন্তু সেই সঙ্কট মেটাতে যথেষ্ট পরিমাণ কয়লা মজুত রয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের কাছে রাজ্যগুলি তাদের বকেয়া অর্থ মেটায়নি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সঙ্কটের বিষয়টিকেই উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এই খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাঁর কথায়, ‘‘সমস্ত বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলি আগামী চার দিনের জন্য নিজেদের এলাকাতেই কয়লা সম্পূর্ণ মজুত করে রেখেছে। সরবরাহের চেনও ঠিকঠাক চলছে।’’ কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী কিন্তু বলেছেন, এই সঙ্কট তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি বছরে অধিক পরিমাণে বৃষ্টিও দায়ী। কয়লাখনিগুলিতে জল ঢুকে পরিস্থিতি খারাপ করেছে। তবে তিন-চার দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন