৫০ কোটির টোপে জাহাজে হেরোইন

এই টোপেই পানামার পণ্যবাহী জাহাজের ক্যাপ্টেন, কলকাতাবাসী সুপ্রীত তিওয়ারি ইরান থেকে ওই হেরোইন নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন গুজরাতের পোরবন্দরের মাঝসমুদ্রে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৪
Share:

বাজেয়াপ্ত: গুজরাত উপকূলে জাহাজে পাওয়া মাদক। ছবি: পিটিআই।

দেড় হাজার কিলোগ্রাম হেরোইন। বাজারদর সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। সেই বিপুল পরিমাণ মহার্ঘ মাদক ভারতের বন্দরে নির্বিঘ্নে নামিয়ে দেওয়ার ইনাম ৫০ কোটি টাকা।

Advertisement

এই টোপেই পানামার পণ্যবাহী জাহাজের ক্যাপ্টেন, কলকাতাবাসী সুপ্রীত তিওয়ারি ইরান থেকে ওই হেরোইন নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন গুজরাতের পোরবন্দরের মাঝসমুদ্রে।

শেষ রক্ষা হয়নি। সুপ্রীত বমাল ধরা পড়ে যান জাহাজেই। কলকাতার এন্টালিতে তাঁর বাড়ি। তিন পুরুষের বাস এখানেই। রবিবার কলকাতায় এসেছিলেন গুজরাত পুলিশের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড বা এটিএসের অফিসারেরা। সোমবার কাকভোরের বিমানে সুপ্রীতের ভাই সুজিত তিওয়ারিকে নিয়ে তাঁরা আমদাবাদে পৌঁছে গিয়েছেন। সোমবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে গুজরাত পুলিশের এটিএসের এসপি হিমাংশু শুক্ল বলেন, ‘‘ওই ৫০ কোটি টাকা সুজিতের কাছে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল এক ব্যক্তির। আমরা সেই খবর পেয়েছিলাম।’’ তবে কার সেই টাকা পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল, তদন্তের স্বার্থে তা খোলসা করে বলতে চায়নি পুলিশ। সেই লোকটিরও খোঁজ চলছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: গাঁজার নেশাই হদিস দিল সনাতনের

কিন্তু সুপ্রীত যে জাহাজে হেরোইন নিয়ে আসছেন, সুজিত আদৌ তা জানতেন কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। শুক্ল বলেন, ‘‘আমরাও নিশ্চিত নই। হতে পারে, সুপ্রীত শুধু টাকাটা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই টাকা কোথা থেকে আসছে বা কেন আসছে, হতে পারে, সুজিত তা জানতেন না। তবে গোটা ঘটনায় সুজিতের যোগ আমরা পেয়েছি। সেই যোগ ততটা গুরুতর না-হলে সুজিতকে এই মামলার অন্যতম সাক্ষীও করা হতে পারে।’’ তবে সুপ্রীতকে প্রাথমিক ভাবে জেরা করে গুজরাত পুলিশ জেনেছে, তিনি এই প্রথম মাদক চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েছেন।

শুক্রবার গুজরাতের পোরবন্দরের কাছে নোঙর করে রাখা ‘এমভি হেনরি’ নামে একটি জাহাজ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার হেরোইন। আসছিল ইরান থেকে। ভারতের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আনা হচ্ছিল সেই মাদক। গুজরাত পুলিশের কাছ থেকে তথ্যসূত্র পেয়ে রবিবার এন্টালি থেকে সুজিতকে আটক করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই জাহাজে প্রায় দেড় হাজার কিলোগ্রাম হেরোইন ছিল। প্রথমে ঠিক ছিল, মুম্বই বন্দরে সেই মাদক নামিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কোনও ভাবে সুপ্রীত এবং তাঁর দলবলের সন্দেহ হয়, গোয়েন্দারা খোঁজ পেয়ে গিয়েছেন। মুম্বই গেলে তাঁরা ধরা পড়ে যেতে পারেন। তাই সিদ্ধান্ত বদলে তাঁরা গুজরাতের পোরবন্দরে হেরোইন নামানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই খবরও অবশ্য পেয়ে যায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর। সতর্ক করা হয় গুজরাতের উপকূলরক্ষী বাহিনীকে। মাঝদরিয়ায় নোঙর করা ওই জাহাজে হানা দেওয়া হয় শুক্রবার। পাওয়া যায় হেরোইন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement