প্রতীকী ছবি।
বছর তিনেক আগে রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। অভিযোগ, বেশ কিছু স্কুল এই নিয়ম মানছে না। তাই শীঘ্রই জেলা স্কুল পরিদর্শকদের মাধ্যমে স্কুলগুলির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু হচ্ছে। তবে প্রাক-প্রাথমিকের পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে শিক্ষা মহলে অসন্তোষ ছড়িয়েছে।
২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছরের পর থেকে প্রাক-প্রাথমিক এবং ছ’বছরের পরে প্রাথমিক স্তর শুরু হওয়ার কথা। তার ভিত্তিতেই রাজ্য স্কুলশিক্ষা দফতর ২০১৪ সালে এক নির্দেশিকায় জানায়, সমস্ত প্রাথমিক স্কুলেই প্রাক-প্রাথমিক স্তর রাখতে হবে। পৃথক সিলেবাসও তৈরি হয়।
তবে সর্বত্র না হলেও বেশ কিছু জেলায় প্রাক-প্রাথমিকের ধারণাই নেই— সে কথা মানছে শিক্ষা মহল। তাঁদের অভিযোগ, পরিকাঠামোর অভাবেই অনেক স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের পঠন পাঠন চালু করা যাচ্ছে না। শিক্ষকদের একাংশের ক্ষোভ, প্রাক প্রাথমিকের জন্য কোনও পৃথক শিক্ষক নিয়োগ করা হয় না। সম্প্রতি প্রাথমিক স্তরের ‘টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট’ বা টেট-এর যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে, সেখানেও প্রথম শ্রেণি থেকে শিক্ষক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকের উল্লেখ নেই। এই স্তরে ‘মন্টেসরি’-প্রশিক্ষিত শিক্ষক প্রয়োজন। তবে এ ধরনের শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি রাজ্যে চালু নেই।
আবার শূন্য পদের হিসেবে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ করে, প্রাক-প্রাথমিকে তাঁদের নিযুক্ত করলেও সমস্যা হচ্ছে। দু’টি দিক সামলাতে গিয়ে পঠনপাঠনের মান শিকেয় উঠছে। পাঁচ বছরের শিশুদের প্রাথমিকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। অবশ্য নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তীর মতে, প্রাক-প্রাথমিক স্তর চালু থাকা উচিত। আর এর জন্য পরিকাঠামোও প্রয়োজন।
প্রাথমিক থেকে শিশুদের স্কুলের পোশাক দেওয়া হলেও প্রাক-প্রাথমিকে তা বরাদ্দ থাকছে না। রোষের মুখে পড়ার ভয়ে বিশেষ করে গ্রামের দিকে প্রাক-প্রাথমিক নিয়ে সচেতনতার প্রচার থেকেও পিছিয়ে আসছে প্রশাসন। আবার কোথাও কোথাও কাগজ কলমে প্রাক-প্রাথমিক চালু রেখেও শিশুদের বসানো হচ্ছে প্রাথমিকের ঘরে!
তবে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি শ্যামপদ পাত্র বলেন, ‘‘প্রাক-প্রাথমিক চালু নেই এমন স্কুলের সংখ্যা খুবই কম। আর প্রাথমিকের শিক্ষকরা প্রাক-প্রাথমিকে ভালই পড়াতে পারেন।’’