শহর কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ভেঙে যাওয়া মূর্তি গড়া নিয়েও চলছে তরজা। মূর্তি ভাঙার ঘটনায় চারিদিকে যখন নিন্দার ঝড় উঠছে, চন্দ্রকোনা রোডে বিদ্যাসাগর মঞ্চের পাশেই ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি তখন পড়ে রয়েছেন অনাদরে। মূর্তি ভাঙার পর বীরসিংহ গ্রামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছিল বিদ্যাসাগরের মূর্তি। কিন্তু, পশ্চিম মেদিনীপুরেরই অন্যপ্রান্তে দেখা যাচ্ছে অন্য চিত্র!
এক দিকে পক্ষীবিষ্ঠা, অন্য দিকে গাছের ডাল-পাতা জমে করুণ অবস্থা পূর্ণাবয়ব বিদ্যাসাগরের মূর্তিটির। বিদ্যাসাগর মঞ্চের সৌন্দর্যায়নের জন্য মঞ্চের মূল ফটকের সামনে কয়েকটি দেবদারু গাছ লাগানো হয়েছিল। আপাতত বিদ্যাসাগরের মূর্তির মুখ ঢেকেছে সেই দেবদারুর ডালপালাতেই।
মূর্তির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে একটি পরিখাও নির্মাণ করা হয়েছিল, সেটিরও বেহাল অবস্থা। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রোদে-জলে চটে যাচ্ছে বিদ্যাসাগরের মূর্তির রং। মূর্তিটি নিয়মিত দেখভালও হয় না। প্রসঙ্গত, বিদ্যাসাগর মঞ্চ ও মূর্তিটি দেখভালের দায়িত্ব গড়বেতা-৩ পঞ্চায়েত সমিতির। সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের গর্ব বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে মানছি! সেটি যাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০০৩ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিদ্যাসাগর মঞ্চ এবং তার পাশেই বিদ্যাসাগরের মূর্তিটির উদ্বোধন করেছিলেন। তারপর গড়বেতা-৩ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে তিনজন কর্মীকেও নিয়োগ করা হয়েছিল। অস্থায়ী ভিত্তিতে সামান্য বেতনের বিনিময়ে কাজ করতেন তাঁরা। এখন সেই
কর্মীরাও আর নেই! মঞ্চে কোনও অনুষ্ঠান থাকলে একজন কর্মী এসে মাঝে মধ্যে মূর্তিটি পরিষ্কার করেন। বছরের বাকি সময় মূর্তি পড়ে থাকে অনাদরেই।
এক সময় বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি দেখভাল করতেন স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আলম। তাঁর কথায়, ‘‘আগে আমরা নিয়মিত মূর্তি পরিষ্কার করতাম। রাতে পাহারাও দিতাম। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতি সামান্য বেতনটুকুও না দেওয়ায়, কাজ ছেড়ে দিয়েছি। এখন মূর্তি রক্ষণাবেক্ষণও নিয়মিত হয় না, রাতে পাহারাও দেওয়া হয় না।’’ বিডিও অভিজিৎ চৌধুরি বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরের মূর্তি সংস্কারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’