ভুবনেশ্বর সিটি কোর্টে অলীক চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র
এ বারেই প্রথম নয়। মাস তিনেক আগেও ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন অলীক চক্রবর্তী। কিন্তু এ বার আর পুলিশের চোখে ধুলো দিতে পারলেন না। বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালের সামনে থেকে বারুইপুর জেলা পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করে ভাঙড়-আন্দোলনের অন্যতম মুখ, নকশাল নেতা অলীককে।
কোন কৌশলে? তদন্তকারীরা জানান, ভাঙড়-আন্দোলনে আগেই ধৃত এক চিকিৎসকের কাছ থেকে তাঁরা জানতে পেরেছিলেন, অলীক মূলত যকৃত, আলসার এবং অর্শের রোগে আক্রান্ত। ভুবনেশ্বরের ওই হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা করাতে যান। প্রথমে অলীকের মোবাইলের সূত্র ধরে খোঁজ শুরু হয়। তাতে সাফল্য মেলেনি। নিজের ফোনটি ভাঙড়ের মাছিভাঙা গ্রামে এক সহযোগীর কাছে রেখে গত ২২ মে ভুবনেশ্বর যান অলীক। আগেও একই ভাবে তিনি মাছিভাঙা ছেড়েছেন। এ বার কিছু দিন ধরে ওই হাসপাতালে নজরদারি চালানো হচ্ছিল।
এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ওই হাসপাতালে রোগীর নামের তালিকায় বৃহস্পতিবার ‘এ চক্রবর্তী’ দেখেই আমরা নিশ্চিত হয়ে যাই। ওখানে আধার কার্ড ছাড়া কোনও নাম লেখা হয় না। সেই কারণে অলীক ভুয়ো নাম ব্যবহার করতে পারেননি।’’
শুক্রবার ভুবনেশ্বর সিটি কোর্টে অলীককে তোলা হয়। তাঁকে চার দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালত চত্বরে অলীকের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান নকশাল নেতারা। রাতেই অলীককে কলকাতায় আনা হয়। আজ, শনিবার অলীককে বারুইপুর আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ। অলীককে দফায় দফায় জেরা করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ভুবনেশ্বর থেকে দিল্লিতে দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সংগঠনের নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরীও সঙ্গে ছিলেন। ভুবনেশ্বরে শিবরাম নামে এক নকশাল নেতার আশ্রয়েই থাকতেন অলীক।
এ দিকে, অলীকের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার ভাঙড়ের ডিবডিবায় মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। বিভিন্ন এলাকায় থাকা অবরোধ বিকেলে হটিয়ে দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীরা অবশ্য আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।