পঠনপাঠনের মান নিয়ে উদ্বেগের সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্সির ‘হেরিটেজ’ বা ঐতিহ্য নষ্টের অভিযোগও প্রবল। মূলত প্রাক্তনী সংসদের তোলা সেই অভিযোগ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ উড়িয়ে দিয়েছেন।
২০ জানুয়ারি ‘সেলিব্রেটিং হেরিটেজ’ নামে একটি বই প্রকাশ করে প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ জানান, হেরিটেজ নষ্ট করা হয়নি, বরঞ্চ সুরক্ষিত করা হয়েছে। কেন্দ্রের গড়া স্বশাসিত সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরি়টেজ’ (ইনটাক)-কে দিয়ে সমীক্ষা করিয়ে হেরিটেজ সুরক্ষিত রাখার শংসাপত্রও পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা।
প্রেসিডেন্সির খবর, প্রতিষ্ঠানের দ্বিশতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে ২০১৬ সালে ক্যাম্পাসের আমূল সংস্কার করা হয়। তখনই সম্প্রসারিত হয় পুরনো ফটক। বদলানো হয় পোর্টিকোর রূপ। দেওয়াল অপরিবর্তিত রেখে উপরের আবরণ কার্যত বদলে ফেলা হয়। চাকচিক্য দেখে প্রাক্তনী সংসদ ও শিক্ষা মহলের একাংশ হেরিটেজ নষ্ট করার বিরুদ্ধে সরব হন। প্রাক্তনী সংসদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মেন্টর গ্রুপের কাছে হেরিটেজ নষ্টের অভিযোগ করেছে। তার ভিত্তিতেই এ বার বই প্রকাশ করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন কর্তৃপক্ষ।
সেলিব্রেটিং হেরিটেজ-এ জানানো হয়েছে পুরনো ফটকটি সঙ্কীর্ণ বলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ, দমকলের গাড়ি ঢুকতে অসুবিধা হত। তাই পুরনো ফটক সরানো হয়েছে। প্রধান ভবন, পোর্টিকো, পাঠাগার, বারান্দা, বেকার ল্যাবরেটরির ছবি পাশাপাশি রেখে সংস্কারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে ওই বইয়ে।
ইনটাকের পশ্চিমবঙ্গ শাখার আহ্বায়ক গৌরমোহন কপূর বলেন, ‘‘হেরিটেজ বজায় রেখে সংস্কার করে প্রতিষ্ঠানকে কত সুন্দর ভাবে সাজানো যায়, প্রেসিডেন্সি সেটা দেখিয়েছে। সমীক্ষায় আমাদের মনে হয়নি যে, কোথাও হেরিটেজ নষ্ট করা হয়েছে।’’
প্রাক্তনী সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিভাস চৌধুরী অবশ্য পুরনো অভিযোগে অনড়। ওই বইয়ের কথা জেনে তিনি বলেন, ‘‘হেরিটেজ সংস্কার করার আগে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষও কারও কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে থাকলে সেই তথ্য সকলকে জানানো হোক। সেটা জানাচ্ছেন না কেন? কারণ, এই ধরনের কোনও অনুমোদনই নেই। সংস্কার নিয়ম মেনে করা হয়নি। ইনটাককেও সমস্ত তথ্য দেওয়া হয়েছে কি না, সন্দেহ আছে।’’
সংস্কারে সব নিয়ম মানা হয়েছে বলে উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার দাবি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা হেরিটেজ সংক্রান্ত নিয়ম মেনেই কাজ করেছি। তার তথ্যও আছে আমাদের কাছে।’’