বাইকে চেপেই ট্রেন ধরতে আসবেন গুরুঙ্গ?

একটি সূত্র বলছে, নেপাল দিয়ে গিয়ে বিহারে ঢুকে ট্রেনে চাপতে পারেন তিনি। আর একটি সূত্রের দাবি, সিকিম থেকে সোজা নেমে এসে দিল্লিগামী কোনও ট্রেনে উঠতে পারেন গুরুঙ্গ।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৩
Share:

বিমল গুরুঙ্গ

হাতের রাশ ক্রমে বেরিয়ে যাচ্ছে। সেই রাশ উদ্ধার করতে গেলে দিল্লি যেতেই হবে, এখন মনে করছেন বিমল গুরুঙ্গ। আর সে জন্য প্রয়োজনে প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়েও রাজধানী যেতে চাইছেন তিনি। মোর্চার গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, দলের সভাপতি মনে করছেন, দিল্লি গিয়ে রাজনৈতিক পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে বন্‌ধ তোলাতে পারলে তিনি ফের স্বমহিমায় ফিরতে পারবেন।

Advertisement

এই মুহূর্তে গুরুঙ্গ যে খুবই অস্বস্তিতে রয়েছেন, সেটা মনে করছে নবান্নও। নবান্নের একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, নামচির বৈঠকের সময়ে যে ভাবে পুলিশ গিয়ে হানা দিয়েছে, তার পরে গোপন ডেরায় লুকিয়ে পড়া ছাড়া বিশেষ উপায়ও নেই গুরুঙ্গের কাছে। গুটিকয় সঙ্গীকে নিয়ে তিনি এখন সেখানে বসেই দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

আরও পড়ুন: ভয় ভাঙাতে জোর প্রচার কার্শিয়াঙে, দোকান খুলল মিরিকে

Advertisement

একটি সূত্র বলছে, নেপাল দিয়ে গিয়ে বিহারে ঢুকে ট্রেনে চাপতে পারেন তিনি। আর একটি সূত্রের দাবি, সিকিম থেকে সোজা নেমে এসে দিল্লিগামী কোনও ট্রেনে উঠতে পারেন গুরুঙ্গ। সেটা বিহারের কিসানগঞ্জ থেকেও হতে পারে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, রংপো থেকে সেবক বা কালিম্পং, লাভা, পাপড়খেতি, মালবাজার হয়ে নিউ কোচবিহার বা এনজেপি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় জোরদার তল্লাশি শুরু হয়েছে। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে গুরুঙ্গ গাড়ির বদলে মোটরবাইকে চেপে সাধারণ পাহাড়বাসীর মতো পালাতে পারেন বলেও একটি সূত্রের খবর। তাই গাড়ির মতো বাইক থামিয়েও তল্লাশি শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পরে শিলিগুড়িতে যাতায়াতের সব রাস্তায় প্রতিটি যানবাহনে অতিরিক্ত তল্লাশি চলছে।’’

এত ঝুঁকি নিয়েও কেন দিল্লি যেতে চাইছেন গুরুঙ্গ?

মোর্চার অন্দরের খবর, কেন্দ্রীয় কমিটির একাংশের পরামর্শেই দিল্লি যেতে মরিয়া গুরুঙ্গ। সেখানে রোশন গিরি রাজনৈতিক স্তরে কথাবার্তা এগিয়ে রেখেছেন। কোনও ভাবে গুরুঙ্গ দিল্লি পৌঁছে রাজনৈতিক পর্যায়ে বৈঠকের পরে বন্‌ধ তুলে নেওয়ার ঘোষণা করে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছে প্রকাশ করলে পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে, ধারণা গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠদের। সে ক্ষেত্রে ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত হলেও তিনি এক জন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে দেশের রাজধানী শহরে কিছুটা সহানুভূতিও পাবেন। আর মোর্চা তো এখনও কেন্দ্রে এনডিএ জোটের শরিক। গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, পাহাড়ের জনজীবন স্বাভাবিক করাতে পারলেই সাম্প্রতিক আন্দোলনের সময়ে যে সব মামলা হয়েছে, তা প্রত্যাহারের আর্জি জানানোর সুযোগ মিলবে। তখন সেই আর্জি রাজ্য চট করে খারিজও করতে পারবে না।

মোর্চার সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে গুরুঙ্গকে যে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, সে কথা সাম্প্রতিক অতীতে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা একাধিক বার বলেছেন। এ দিন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও বলেন, ‘‘পাহাড়ে নতুন কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করে পরিস্থিতি জটিল করা উচিত নয় রাজ্যের।’’

সেই আশাতেই সম্ভবত বুক বেঁধেছেন গুরুঙ্গ। কিন্তু এই সমর্থনের পালে হাওয়া জোরালো করতে তাঁর দিল্লি যাওয়া জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন