—ফাইল চিত্র।
নোট বাতিলের প্রতিবাদ করায় তাঁকে খুনের চক্রান্ত হয়েছে। বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে ধর্না দিতে গিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমান দুর্ঘটনায় তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ফের দাবি করেছেন। নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ফের প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, তৃণমূল নোট বাতিলের বিরোধিতা করছে বলেই একের পর এক সাংসদকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। রাজ্যে চিট ফান্ডের রমরমার জন্য বামেদের তো বটেই, রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও এ দিন দায়ী করেছেন তিনি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে তৃণমূলের যে ধর্না চলছিল, আজই ছিল তার শেষ দিন। সেই উপলক্ষে এ দিনের কর্মসূচিতে দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কথা মতো বিকেলেই তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনের ধর্না মঞ্চে পৌঁছন। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। তিনি জানান, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার ৪৫ মিনিটের মাথায় তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আর তৃণমূল সর্বাগ্রে প্রতিবাদ জানিয়েছিল বলেই তৃণমূল সাংসদদের একে একে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির তীব্র প্রতিবাদ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘কোনও তথ্য-প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও সুদীপ’দাকে গ্রেফতার করেছে।’’ তিনি এ দিন ফের প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কী করেছে মুকুল? কী করেছে শুভেন্দু? কী করেছে শোভন? কী করেছে ফিরহাদ?’’ বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি মামলার তদন্তে এই নেতারাও সিবিআই-এর তলব পেতে পারেন বলে জল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোজ ভ্যালি ও সারদার মোহনায় নতুন নাম, সন্দেহের তিরে এক সাংসদ
তবে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তথা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তুলেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হল, তাঁকে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ। ডিসেম্বরে পটনা থেকে থেকে কলকাতা ফেরার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান বেশ কিছু ক্ষণ কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের অনুমতি পায়নি। জ্বালানি কম থাকার কথা পাইলট জানানো সত্ত্বেও ৪০ মিনিট তাঁর বিমানকে কলকাতার আকাশে চক্কোর কাটতে হয়। অবতরণের পরই তীব্র বিষোদ্গার করেছিল তৃণমূল। এ দিন ফের সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘নোট বাতিলের প্রতিবাদ করেছি বলে আমাকে খুনের চক্রান্ত করেছিল। বিমান দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আমাকে খুন করার চক্রান্ত করেছিল।’’
বাংলায় বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির রমরমার জন্য সিপিএমকে এ দিন ফের দায়ী করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আমলে কোনও চিট ফান্ড হয়নি। সুজনবাবুর আমলে সারদা হয়েছিল। জ্যোতিবাবুর আমলে হয়েছিল। তদন্ত করতে হলে প্রথম দিন থেকে করুন।’’ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সেবির নজরদারি ঠিক মতো ছিল না বলেই এ রাজ্যে চিট ফান্ডগুলি চলতে পেরেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মন্তব্য করেছেন।