জলপাইগুড়ি সংশোধনাগার।
দেশ জুড়ে আজ স্বাধীনতার উৎসব। তারই মধ্যে স্বাধীনতা দিবসকে ‘কালা দিবস’ হিসেবে পালন করতে চান জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি রাজা সরখেল, সাগুন মুর্মু এবং শম্ভু সোরেন। লৌহকপাটের অন্তরালে বঞ্চনার অভিযোগে এবং কয়েকটি দাবিদাওয়ার কথা জানিয়ে ওই তিন বন্দি আজ, বুধবার ২৪ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন করবেন বলে তাঁদের ঘনিষ্ঠদের তরফে জানানো হয়েছে।
রাজা কলকাতার বাসিন্দা। অথচ তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে জলপাইগুড়ির জেলে। বাড়ির কাছে কোনও সংশোধনাগারে বদলি করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু কারা-কর্তৃপক্ষ সেই আবেদনে কর্ণপাত করছেন না বলে রাজার ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ। পাশাপাশি, সাগুনের দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে আসা সত্ত্বেও উপযুক্ত চিকিৎসা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠেরা। তৃতীয় বন্দি শম্ভু মায়ের শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আর্জি মঞ্জুর হয়নি। তার প্রতিবাদে প্রতীকী অনশনে তিনিও যোগ দেবেন। এই ধরনের অনশনে পরিস্থিতির বদল হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় আচে তাঁদের ঘনিষ্ঠদের। তাঁদের বক্তব্য, এই সব বিষয়ে একাধিক বার সংশোধনাগার-কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তিন বন্দিই একদা রাজনৈতিক বন্দির মর্যাদা পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর তাঁরা তা পান না।
এই অবস্থায় অবশ্য স্বাধীনতা দিবসে খানিকটা মুক্তির স্বাদ পেতে চলেছেন ২৫ জন বন্দি। কারণ, তাঁদের সংশোধনাগার থেকে মুক্ত সংশোধনাগার পাঠাতে চলেছে কারা দফতর। ফলে ওই ২৫ জন নিজেদের মতো করে সময় কাটাতে পারবেন। সংশোধনাগার থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বেরিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের মতো কাজ করে উপার্জনও করতে পারবেন তাঁরা।
এর পাশাপাশি সম্পূর্ণ মুক্তির স্বাদ মেলার কথা ছিল কয়েক জন বন্দির। কিন্তু নিয়মকানুনের গেরোয় আপাতত তা হচ্ছে না। কারা দফতরের ডিজি অরুণ গুপ্ত বলেন, ‘‘বুধবার ২৫ জনকে মুক্ত সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। সম্পূর্ণ মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।’’