মোদী বিরোধী সব মঞ্চে হাজির তৃণমূল

২০১৯-এর লোকসভা ভোটে নজর রেখেই তৃণমূল নেত্রী চাইছেন, বিজেপি-বিরোধী জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৫
Share:

দেশে বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের লক্ষ্যে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না তৃণমূল। তাই দেশের যে কোনও প্রান্তে কেন্দ্র-বিরোধী কোনও শক্তি মাথা তুলে দাঁড়ালেই, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানাতে বিলম্ব করছেন না তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

২০১৯-এর লোকসভা ভোটে নজর রেখেই তৃণমূল নেত্রী চাইছেন, বিজেপি-বিরোধী জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে। সে জন্য পশ্চিমবঙ্গে যে দলগুলির কার্যত কোনও অস্তিত্ব নেই কিন্তু জাতীয় রাজনীতির আঙিনায় ভূমিকা রয়েছে, মূলত সেই সব দলের সঙ্গে ‘বোঝাপড়া’ বাড়াচ্ছেন মমতা। যে তালিকায় রয়েছে শিবসেনা, এনসিপি, আম আদমির পার্টি প্রভৃতি দল। আছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশোবন্ত সিন্‌হার মঞ্চও। কিছুদিন আগে মুম্বইয়ে গিয়ে বাল ঠাকরের পুত্র উদ্ধবের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেছিলেন মমতা। এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। দক্ষিণের বিভিন্ন দলের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মমতা। তবে এই অঙ্কে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে থাকার কোনও ইঙ্গিত তিনি দেননি। বরং রাজ্যে ‘একলা চলার’ কথাই বলেছেন।

জাতীয় রাজনীতিতে মঙ্গলবারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল এনডিএ জোট ছেড়ে শিবসেনার বেরিয়ে আসা। সেই ঘটনা নিয়ে এ দিন রাত পর্যন্ত মমতা নিজে কোনও মন্তব্য না করলেও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এনডিএ যে ভাঙছে, তা এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট। আর বিজেপি তো চালায় হাতে গোনা দু’তিন জন। ফলে দলের মধ্যেও অসন্তোষ রয়েছে। বিজেপি দলটাও ভাঙবে।’’ তৃণমূল-শিবসেনার ‘বোঝাপড়া’তেই এ দিন উদ্ধব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘‘ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে শুধু আমদাবাদেই কেন নিয়ে যাওয়া হল? ওঁকে মহারাষ্ট্রে বা পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে যাওয়া হল না কেন?’’

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতিকে সরানোর তোড়জোড়

কেন্দ্র বিরোধিতার এই বাতাবরণেই আগামী ২৬ জানুয়ারি মুম্বইয়ে ‘সংবিধান বাঁচাও’-এর ডাক দিয়েছেন শরদ পওয়ার। দু’কিলোমিটার ব্যাপী ওই পদযাত্রায় বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেরই উপস্থিত থাকার কথা। পওয়ারের আহ্বানে তৃণমূলও সেই পদযাত্রায় যোগ দিতে সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে মুম্বই পাঠাচ্ছে। এর পরেই ৩০ জানুয়ারি দিল্লিতে কেন্দ্রের জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিন্হার মঞ্চেও সামিল হবে তৃণমূল। সেখানেও তাদের প্রতিনিধি গুজরাতি দীনেশ। কংগ্রেস, জেডিইউ, সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে একই মঞ্চে তৃণমূলের অংশগ্রহণ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

২০১৯-এর আগে জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলকে পাশে পেতে যে এখন বিজেপি-বিরোধী দলগুলি মরিয়া, তার ইঙ্গিত দিয়ে দলের মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই কেন্দ্র বিরোধিতার প্রধান মুখ। তাই সব বিজেপি-বিরোধী দলই তাঁকে পাশে পেতে উৎসাহী। সংসদের ভিতরে ও বাইরেও তাই ওই দলগুলির সঙ্গে তৃণমূলের সখ্য বাড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন