TMC at Raj Bhavan

জনস্রোত নিয়ে রাজভবনের দুয়ারে অভিষেক, বকেয়া আদায়ের আন্দোলন চলছে, শহরে ফেরেননি রাজ্যপাল

কেন্দ্রের কাছে ১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকার দাবি নিয়ে দিল্লিতে গিয়েছিল তৃণমূল। সেখান থেকে ফিরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজভবন অভিযান চলছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৪১
Share:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে ‘রাজভবন অভিযান’-এর ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। সেই মতোই বুধবার দুপুর ২টোর পরে রবীন্দ্র সদন থেকে শুরু হয় মিছিল। যোগ দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। চোখে পড়ার মতো ভিড় হয়েছিল তৃণমূলের মিছিলে। সেনাপতি অভিষেকের সঙ্গে দেখা যায় দলের সাংসদ, বিধায়ক-সহ শাসকদলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের।

Advertisement

তবে অভিষেক জনস্রোত নিয়ে রাজভবনের দুয়ারে পৌঁছে গেলেও রাজ্যপালের দেখা মেলেনি। তিনি বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে কলকাতায় ফেরেননি। উত্তরবঙ্গ থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আবার দিল্লিতে চলে গিয়েছেন। অর্থাৎ, রাজ্যপালহীন রাজভবনের সামনে তৃণমূলের বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগ, রাজ্যপাল তাদের বিক্ষোভ আন্দোলনে ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছেন।

রাজভবনের সামনে সমাবেশে ভাষণ দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। একে একে মঞ্চে ওঠেন সায়নী ঘোষ, ফিরহাদ হাকিম, মহুয়া মৈত্র, শতাব্দী রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা। বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে তাঁরা বক্তৃতা করেন। তবে সন্ধ্যা ৭টাতেও অভিষেককে মঞ্চে ভাষণ দিতে দেখা যায়নি।

Advertisement

বুধবার তৃণমূলের তরফে রাজ্যপালের কাছে সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শাসকদলের দাবি, বোস জানিয়েছেন, তিনি উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। সেখানে গিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারে! রাজ্যপালের এই জবাবকে সরাসরি ‘জমিদারি মানসিকতা’ বলে তোপ দেগেছে বাংলার শাসকদল। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক দিল্লি অভিযানের সময় অভিষেকও কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপিকে ‘জমিদারি মানসিকতা’র কথা বলে আক্রমণ করেছিলেন।

মঙ্গলবার দিল্লিতে কৃষিভবন থেকে অভিষেকদের আটক করে মুখার্জিনগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাতে সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন। বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনই প্রথম লিখেছিল, রাজ্যপাল সেই ঘোষণার আগেই কেরল চলে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁর কলকাতায় থাকা নিয়ে সংশয় রয়েছে। রাতে জানা যায়, তিনি কেরল থেকে দিল্লি গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি দিল্লি থেকেই উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাবেন। সেই মতোই বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে বাগডোগরা পৌঁছন বোস। তার পর যান প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে।

মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা না করে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি। আমরা তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে বাংলার বঞ্চিত মানুষের কথা বলব। যে ৫০ লক্ষ চিঠি আমরা নিয়ে এসেছিলাম, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা নেননি। তাই সেই চিঠিগুলি আমরা রাজ্যপালকে দেব।’’

মঙ্গলবার দিল্লিতে গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন জানালেও শেষ পর্যন্ত দেখা করার জন্য সময় দিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। কিন্তু মঙ্গলবার অনেক রাতে তিনি জানিয়ে দেন, তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। এমন কথা জানতে পেরেই কৃষি ভবনের ভিতরে অভিষেকের নেতৃত্বে ধর্না শুরু হয়। তার পর দিল্লি পুলিশ কৃষি ভবন থেকে বার করে মুখার্জি নগর থানায় নিয়ে যায় তৃণমূল নেতৃত্বকে। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই অভিষেক এক লক্ষ কর্মী নিয়ে রাজভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে দেন। তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যপাল যে হেতু রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে রাজ্যের দায়িত্বে রয়েছেন, তাই তাঁর কাছেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন