হরতালে নেই, মিছিলে তৃণমূল, দূরে ফ ব-ও

পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তারাও আছে। কিন্তু এই প্রশ্নে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসের ডাকা ভারত বন্‌ধ এবং বামেদের প্রতিবাদ হরতালকে সমর্থন করছে না তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তারাও আছে। কিন্তু এই প্রশ্নে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসের ডাকা ভারত বন্‌ধ এবং বামেদের প্রতিবাদ হরতালকে সমর্থন করছে না তৃণমূল। রাজ্যকে সচল রাখার জন্য প্রশাসনিক ভাবে যাবতীয় উদ্যোগের পাশাপাশিই ওই দিন পথে নেমে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে তারা। ঘটনাচক্রে, বামফ্রন্টের শরিক হয়েও হরতালে সামিল না হওয়ার ঘোষণা করে অনেকটা তৃণমূলের মতোই অবস্থান নিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক!

Advertisement

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘‘কংগ্রেস-সহ বামেরা ধর্মঘট ডেকেছে। বিষয়গুলিকে সমর্থন করছি। কিন্তু কর্মনাশা ধর্মঘট পালন করতে দেব না।’’ কলকাতায় সে দিন মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করবে তৃণমূল। জেলায় জেলায় মিছিল ও সভাও হবে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি-সহ নানা প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরোধিতা করেও ধর্মঘটকে কেন সমর্থন করছেন না? পার্থবাবুর জবাব, ‘‘বন্‌ধটা চমক ছাড়া কিছু নয়!’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় কোনও দলের ডাকা ধর্মঘটে যা হয়, এ বারও একই ভাবে সরকারি কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এ দিন নির্দেশিকা জারি করেছে অর্থ দফতর। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ১০ তারিখ অর্ধদিবস বা পূর্ণদিবস— কোনও ক্যাজুয়াল লিভই মঞ্জুর হবে না। নির্দিষ্ট কিছু কারণে যাঁরা আগে থেকে ছুটিতে আছেন বা নির্দেশিকায় বলে দেওয়া কয়েকটি কারণে যাঁরা অনুপস্থিত থাকবেন, তাঁরাই শুধু ব্যতিক্রম হবেন। যানবাহনের সমস্যা গরহাজিরার বৈধ কারণ বলে গ্রাহ্য হবে না। বেঁধে দেওয়া কারণ ছাড়া দফতরে না এলে বেতনও কাটা যাবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘আপনার মার খাওয়া উচিত ছাত্রদের হাতে’​

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য বলেছেন, ‘‘মোদী সরকারের কাজকর্মের ফলে যাঁরা আক্রান্ত, তাঁদের সকলকেই হরতাল সমর্থন করতে আবেদন জানাচ্ছি। তৃণমূল মিছিল করলে স্বাগত। তবে বিরোধিতা করলে বিজেপি-বিরোধিতার নামে কারা দ্বিচারিতা করছে, সে দিন বোঝা যাবে!’’ জোর করে তাঁরা কোথাও হরতাল সফল করার চেষ্টা করবেন না বলেও সূর্যবাবু জানিয়েছেন। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, সমাজকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদও তাঁরা হরতালের বিষয়ের মধ্যে রাখছেন। বামেদের হরতাল হবে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। যদিও কংগ্রেসের বন্‌ধ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টে।

কংগ্রেসের ধর্মঘটকে সমর্থন নয়, তারা পৃথক ভাবেই হরতাল করছে জানিয়ে এসইউসি, লিবারেশন-সহ সব বামপন্থী দল একজোট হলেও ভিন্ন সুর নিয়েছে ফ ব। দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘হরতালের বিষয়গুলির বিরোধিতা করছি না। কিন্তু বাম ঐক্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণে এই হরতালে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশগ্রহণ করছি না।’’ ফ ব-র ক্ষোভ, দিল্লিতে পাঁচ বাম দলের সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পরে তাদের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসকে ফোনে জানানো হয়েছে। যদিও সূর্যবাবু বলেছেন, ‘‘ওঁদের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তার মানে এই নয় যে, ওঁরা হরতালের বিরোধিতা করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন