Suvendu Adhikari

বিনা বাধাতেই নেতাইয়ে শুভেন্দু, অস্বস্তি তৃণমূলে

সভা শেষে শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের মঞ্চে ডেকে নেন শুভেন্দু। এসেছিলেন নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি দ্বারকানাথ পন্ডাও।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

লালগড় শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫২
Share:

আশ্বাস: নেতাইয়ে শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

গত ৭ জানুয়ারি নেতাই দিবসে আসেননি শুভেন্দু অধিকারী। সে দিন শহিদ স্মরণের রাশ ছিল পুরোপুরি তৃণমূলের হাতে। তবে সে মঞ্চে শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের নিশানায় কিন্তু ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাই। লালগড়ের পথে মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন হয়েছিল, পাছে শুভেন্দু এসে পড়েন! তবে সে আশঙ্কা সত্যি হয়নি। নেতাই নিয়ে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছিল তৃণমূল।

Advertisement

তবে তার ২৩ দিন পরে নেতাই গ্রামে বিজেপির দলীয় সভা করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের অস্বস্তি কার্যত বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার ভিড়ে ঠাসা লোকজনের মাঝে লালগড় থেকে নেতাই পর্যন্ত মাত্র তিন কিমি রাস্তা শুভেন্দুর হেঁটে পৌঁছতে ৫০ মিনিট সময় লেগে যায়। শহিদবেদির পাশে বিজেপির দলীয় পতাকা দেওয়া সভামঞ্চের ব্যাকড্রপে ছিল শুভেন্দু, নরেন্দ্র মোদী, জেপি নড্ডা, সাংসদ কুনার হেমব্রম-সহ রাজ্য সভাপতি ও জেলা সভাপতির ছবি।

এ দিন শুভেন্দুর বক্তব্যে ছিল উত্তাপ। তিনি বলেন, ‘‘কে রুখে দেয় আমি দেখব। আমিও জানি কী ভাবে সোজা করতে হয়। অনেক বড় বড় মাতব্বরকে সোজা করেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোদ্দ পুরুষও আমাকে আটকাতে পারবে না।’’ নেতাই কাণ্ডের জেলমুক্ত অভিযুক্তদের নাম না করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যাঁরা দশ-বারো বছর জেল খেটে ফিরে এসেছেন, তাঁরা ভদ্র থাকুন, ভাল থাকুন। বেশি আর লাল ঝান্ডা নিয়ে উৎপাত করবেন না। এসব করতে যাবেন না। আবার বিপদে পড়বেন। পাশে কেউ দাঁড়াবে না। এখন সব গেরুয়া ঝান্ডা হয়ে গিয়েছে। আপনারা পারবেন না তৃণমূলকে টাইট দিতে। আমরা ছাড়া কেউ পারবে না।’’

Advertisement

সভা শেষে শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের মঞ্চে ডেকে নেন শুভেন্দু। এসেছিলেন নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি দ্বারকানাথ পন্ডাও। শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘শহিদবেদিতে আমাকে মালা দিতে বাধা দেওয়ার বিষয়টি দ্বারকাবাবু ও নেতাইবাসী মানেননি। তাই দ্বারকাবাবুকে স্মৃতিরক্ষা কমিটি থেকে সরানো হয়েছিল। এটা বিজেপির কর্মসূচি। উনি বিজেপির সদস্য নন, তাই তাঁকে আহ্বান করতে পারি না। কিন্তু উনি নিজে এসে পুরো গ্রামের মানুষের মনের কথা বলে দিলেন।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে নেতাই গ্রামে এমন সভায় উচ্ছ্বসিত গেরুয়া শিবির। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘সভা একশো শতাংশ সফল হয়েছে। নেতাইবাসী প্রমাণ করে দিয়েছেন শাসকের রক্তচক্ষুকে তাঁরা ভয় পান না।’’

এলাকার বিধায়ক (ঝাড়গ্রাম) তথা প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এদিন কলকাতায় ছিলেন। বিরবাহা বলছেন, ‘‘আমি সরকারি কর্মসূচিতে কলকাতায় আছি। কী ভাবে শহিদবেদি স্থলে বিজেপি দলীয়সভা করল খোঁজ নেব।’’ নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সম্পাদক তথা লালগড় ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সরজিত রায়ের দাবি, ‘‘বাধা দিলে অশান্তি হত। আমরা অশান্তি চাই না। কারা শহিদবেদি স্থলে গেরুয়া পতাকা নিয়ে দলীয় সভা করল নেতাইবাসী দেখলেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নেতাইয়ের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই আছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন