টক্কর দিচ্ছে শাসক দল

শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ হাজার দশেক মানুষকে মিছিল বেরোয় ঠাকুরনগর খেলার মাঠ থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫৮
Share:

শাসক দলের মিছিল হয়েছে, নাগরিকপঞ্জি আইন বাতিল ও বিভাজনের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের আগে তৃণমূলের তরফে মিছিল হল ঠাকুরনগরে। স্লোগান উঠল, ‘প্রধানমন্ত্রী দূর হটো।’’

Advertisement

শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ হাজার দশেক মানুষকে মিছিল বেরোয় ঠাকুরনগর খেলার মাঠ থেকে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে ঠাকুরনগরে দলের এত বড় মিছিল হয়নি।

এ দিন শাসক দলের মিছিল হয়েছে, নাগরিকপঞ্জি আইন বাতিল ও বিভাজনের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে। নাগরিকপঞ্জি থেকে অসমে বহু মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। মতুয়াদের একাংশ ওই ঘটনায় বিজেপি ও কেন্দ্রের উপর চটে আছেন।

Advertisement

কারণ, তালিকায় অনেক মতুয়ার নামও বাদ গিয়েছে বলে ঠাকুরবাড়ি সূত্রের খবর। প্রধানমন্ত্রীর সভার আগে ওই বিষয়টি ফের মতুয়াদের স্মরণ করিয়ে দেওয়ার সুযোগ ছাড়েনি তৃণমূল। এ দিন ঠাকুরবাড়ির মেলার মাঠে সাংসদ মমতা ঠাকুর মতুয়াদের সম্মেলন শুরু করেছেন। সেখানেও এনআরসি নিয়ে আলোচনা সভা করা হয়।

জেলা বিজেপি সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভার আগে এমন মিছিলের অনুমতি পুলিশ কী ভাবে দিল, মতুয়ারা এর জবাব দেবেন।’’ তৃণমূল জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য দাবি করেছেন, এই মিছিলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফরের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা তাঁদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি।

ঠাকুরনগরের পথঘাট দলীয় পতাকা, মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউটে ভরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর ছবির সঙ্গে কোথাও লেখা হয়েছে, বড়মাকে বঙ্গবিভূষণ সম্মান দেওয়ার কথা। কোথাও হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ তৈরির জন্যও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। মুখ্যমন্ত্রীর ছবির নীচে লেখা, ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ।’ যদিও দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তৃণমূলের তরফেই লাগানো হয়েছে ছবি। এমনও দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ছবির পাশেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। দু’দলের পতাকা পাশাপাশি ঝুলছে। প্রধানমন্ত্রীর ছবির সঙ্গে তৃণমূলের পতাকাও চোখে পড়ল।

বিজেপির তরফে অভিযোগ, হাবড়া-সহ কয়েকটি এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়া হোর্ডিং তৃণমূল ছিঁড়ে দিয়েছে। শাসক দল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

দীর্ঘ দিন ধরে মতুয়াদের পাশে থেকেছে তৃণমূল। ইভিএমেও প্রতিদান উপুড় করে দিয়েছেন মতুয়ারা। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরানোর চেষ্টা হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘বড়মার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মা-মেয়ের সম্পর্ক। মতুয়ারা তৃণমূলের সঙ্গে ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।’’ বনগাঁর সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘কিছু মতুয়া হয় তো প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে সভায় আসবেন। কিন্তু এর প্রভাব ভোটবাক্সে পড়বে না।’’

সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে সরগরম ঠাকুরনগর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন