প্রতীকী ছবি। শাটার স্টক
কর্মীদের পিএফের টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠল সমবায় পরিচালিত এক হিমঘর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আর সেই ঘটনায় নাম জড়িয়ে গেল তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য সুজয় পাত্রের। তাঁর নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় শাসকদলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে।
চন্দ্রকোনা কো-অপারেটিভ কোল্ড স্টোরেজ সোসাইটি নামে ওই হিমঘরের সম্পাদক হলেন সুজয়। তিনি ছাড়াও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের হয়েছে সোসাইটির চেয়ারম্যান পাবর্তী মাইতির বিরুদ্ধে। শুক্রবার এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফের) কর্তৃপক্ষের তরফেই এই অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্তে নেমেছে চন্দ্রকোনা পুলিশ। যদিও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সুজয়। তাঁর দাবি, “বিষয়টি আমার জানাই ছিল না। আচমকাই শুনছি আমার নামে থানায় অভিযোগ হয়েছে। আসলে হিমঘরের এক কর্মী ওই টাকা নিয়ম করে জমা দেন। কেন উনি ওই টাকা জমা করেননি তা খতিয়ে দেখব।’’ দ্রুতই হিমঘর কর্মীদের ইপিএফের টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আরেক অভিযুক্ত পাবর্তীবাবুরও দাবি, “হিমঘরের কর্মীদের টাকা আত্মসাতের কোনও প্রশ্নই নেই। এ রকম কেন হল,তা দেখব।”
সত্তরের দশকে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার কালিকাপুর সংলগ্ন ভৈরবপুরে সমবায় নিয়ন্ত্রিত ওই হিমঘরটি চালু হয়েছিল। চন্দ্রকোনা-২ এবং ক্ষীরপাই ব্লকের সমবায় সমিতি গুলিও এই হিমঘরের অংশীদার। আগে বামেরাই ছিল সমবায় নিয়ন্ত্রিত এই হিমঘর পরিচালনার দায়িত্বে। রাজ্যে পালাবদলের পরে পরিচালন সমিতির দায়িত্ব পায় তৃণমূল। সংস্থার সম্পাদক নির্বাচিত হন ক্ষীরপাই ব্লকের তৃণমূল নেতা সুজয় পাত্র। পুলিশ ও হিমঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ওই হিমঘরে ছ’জন স্থায়ী কর্মী রয়েছে। নিয়ম করেই কর্মীদের বেতন থেকে ইপিএফের টাকা কেটে নেওয়া হয়। অভিযোগ, ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পযর্ন্ত কর্মীদের ইপিএফ বাবদ সাতানব্বই হাজার টাকা কাটা হলেও নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। হিমঘর কর্মী অঞ্জন দাস বললেন, “আমাদের তো বেতনের সময় টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু ইপিএফের টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি।’’ আর এক কর্মী সুভাষ ঘোষের কথায়, “টাকা কাটার পরেও কেন জমা পড়ল না জানি না।” সম্প্রতি বিষয়টি নজরে আসে ইপিএফ সংস্থার। তারপর একাধিক ইমেলে কারণ জানতে চাওয়া হয়। ওই টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু চন্দ্রকোনা কো-অপারেটিভ কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ টাকা জমা দূরঅস্ত, চিঠিরও উত্তরও দেননি বলে অভিযোগ। এরপরই শুক্রবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়।