রীতিমতো নাটকীয় কায়দায় তাঁকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই কাশীপুরের তৃণমূল নেতা স্বপন চক্রবর্তীর জামিন পাওয়ার পিছনে কাশীপুর থানার নাটকীয় ভূমিকাকেই দায়ী করছেন লালবাজারের একাংশ। তাঁরা বলছেন, স্বপনকে গ্রেফতার করা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত জোরালো করা হয়নি। তার ফলেই তাঁকে জেলে আটকে রাখার পক্ষে জোরালো সওয়াল করতে পারেননি সরকারি আইনজীবীরা।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে স্বপনকে গ্রেফতার করেছিল কাশীপুর থানা। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও ছিল। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই একের পর এক মামলায় জামিন পেয়ে যেতে থাকেন তিনি। সোমবার শিয়ালদহের দায়রা আদালত থেকে শেষ মামলাতেও জামিন পেয়েছেন স্বপন। তাঁর আইনজীবী মহম্মদ সাদিক বলেন, ‘‘কেস ডায়েরিতে আমার মক্কেলকে আটকে রাখার মতো কোনও কারণ বিচারক খুঁজে পাননি।’’ পুলিশের একাংশ বলছে, গ্রেফতারের পর দু’বার স্বপনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েও তদন্ত এগোতে পারেননি তদন্তকারী অফিসার।
পুলিশ সূত্রের খবর, কাশীপুর এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন নয়। তার পিছনে স্বপন এবং তাঁর বিরোধী আনোয়ার খানের কথাই উঠে এসেছে। বার বার এলাকা উত্তপ্ত হলেও কাশীপুর থানা কাউকেই গ্রেফতার করেনি। গ্রেফতারে গা লাগায়নি লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগও। কিন্তু জানুয়ারির শেষে নবান্নের শীর্ষস্তর থেকে কাশীপুরের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের গ্রেফতারের নির্দেশ গিয়েছিল লালবাজারে। তার পরেই তড়িঘড়ি স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়। আনোয়ারকে অবশ্য গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এ দিন কেস ডায়েরিতে স্বপনের বিরুদ্ধে জোরালো কারণ না দেখাতে পারায় লালবাজারের অনেকেই বলছেন, ‘‘নবান্নের শীর্ষস্তর থেকে গ্রেফতারের নির্দেশ পেয়ে স্বপনকে ধরা হয়েছিল। কিন্তু আটকে রাখতে হবে, এমন নির্দেশ তো ছিল না!’’ ভোটের আগে জামিন পাওয়ার পিছনে রাজনৈতিক পরিচয় কাজ করেছে বলেও পুলিশের কেউ কেউ মনে করছেন।