shreerampur

তরুণ ফুটবলার খুনের মামলায় অভিযুক্ত হুগলির তৃণমূল নেতা বেকসুর খালাস

২০১৭-র ২ অক্টোবর শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছে রেললাইন থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণ ফুটবলার স্নেহাশিস দাশগুপ্ত(রাজা)-র দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ২০:৩১
Share:

পিন্টু নাগ এবং স্নেহাশিস দাশগুপ্ত। নিজস্ব চিত্র।

প্রায় ৪ বছর আগে স্থানীয় এক প্রতিভাবান ফুটবলারকে খুনের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন শ্রীরামপুর পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর পিন্টু নাগ। তৃণমূল নেতা পিন্টুর সঙ্গে এই মামলায় সহ-অভিযুক্ত ৭ জনকেও বুধবার বেকসুর খালাস করেছে শ্রীরামপুরআদালত।

Advertisement

২০১৭-র ২ অক্টোবর শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছে রেললাইন থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণ ফুটবলার স্নেহাশিস দাশগুপ্ত(রাজা)-র দেহ। প্রতিশ্রুতমান গোলকিপার স্নেহাশিস কলকাতা মাঠে খেলতেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে পিন্টুর ভাইপোর সঙ্গে ঝামেলা হয় রাজার। গভীর রাতে তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধর করে পিন্টু ও তাঁর দলবল। তারপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন স্নেহাশিস। পরের দিন ভোরে তাঁর দেহ মেলে তারাপুকুর গভর্নমেন্ট কোয়ার্টার এলাকার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন রেললাইনে।

ঘটনার তদন্ত শুরু করে শেওড়াফুলি জিআরপি। গ্রেপ্তার হন পিন্টু-সহ ৮ জন অভিযুক্ত। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলা হয়। বিরোধী কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব এহং ‘আমরা আক্রান্ত’-র তরফে তারাপুকুর এলাকায় সভা করে দোষীদের শাস্তির দাবি তোলা হয়। তিন মাস জেল খাটার পর জামিনে মুক্ত হন পিন্টু। সেই মামলায় চার্চশিটের পর, ট্রেনের গার্ড, চালক, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ-সহ মোট ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বুধবার শ্রীরামপুর আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন জজ সুরেশ বিশ্বকর্মা অভিযুক্তদের সব দোষ থেকে মুক্তি দিয়ে মামলা থেকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন।

Advertisement

রায় ঘোষণার পর পিন্টু বলেন, ‘‘যে কোনো মৃত্যুই দুঃখের। কিন্তু রাজার মৃত্যুর পর দেখা গেল আমি, আমার স্ত্রী মৌসুমী এমনকি, আমার নাবালিকা মেয়ের নামে অভিযোগ করা হল। অথচ আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানতাম না। আমি রাজনীতি করি বলে আমাকে ও আমার পরিবারকে বদনাম করতেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের কিছু মানুষ মিথ্যা অভিযোগ করেন। আমাদের আইনের প্রতি আস্থা ছিল। আজকে আদালত যে রায় দিয়েছে, তাতে বিচার ব্যবস্তার প্রতি শ্রদ্ধা আরও বাড়ল।’’

পিন্টুর আইনজীবি সিদ্ধেশ্বর বেজ বলেন, ‘‘আমাদের মক্কেল যে সম্পূর্ণ নির্দোষ, তা মামলা দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম। খুনের মামলা হলেও সেটার স্বপক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে পারেননি তদন্তকারীরা। কোনও প্রত্যক্ষদর্শীও পাওয়া যায়নি।’’ পিন্টুর আরেক আইনজীবী রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘একটা দূর্ঘটনাকে খুনের মামলা বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। সেই মিথ্যা অভিযোগ আদালত খারিজ করায় প্রমাণ হয়ে গেল আমাদের মক্কেল নির্দোষ।’’

অন্যদিকে, স্নেহাশিসের মা রিঙ্কি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমি বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় সরকারী আইনজীবি এবং বামদের যে আইনজীবি ছিলেন তাঁরা অসহযোগিতা করতে থাকেন। মামলার দিন কবে পড়ত, সেটাও জানতে পারতাম না।’’ এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবার কথাও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন