বিধানসভা ভোটের আগে বর্ধমান জেলায় দলের গোষ্ঠী-বিবাদ মেটাতে হস্তক্ষেপ করতে হল তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বকে। ভাতারের দলীয় বিধায়ক বনমালী হাজরা ও তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের তকর্ক করে দেওয়া হল রাজ্য নেতৃত্বের তরফে। আবার আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ গঠনের আগে দলীয় বিবাদ মেটাতেও বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন বর্ধমান জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অরূপ বিশ্বাস। কলকাতায় জেলার নেতাদের ডেকে পাঠিয়েই বৃহস্পতিবার দু’দফায় ওই বৈঠক হয়েছে। জেলা থেকে দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও স্বপন দেবনাথও ছিলেন।
ভাতারের ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। সম্প্রতি বিজয়া সম্মিলনীর নামে প্রকাশ্য সভা ডেকে বনমালীবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। বনমালীবাবুর বদলে আসন্ন বিধানসভা ভোটে ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীকে প্রার্থী করার দাবিও ওঠে। আগামী রবিবার এর পাল্টা সভা করার কথা ছিল বনমালীবাবুর। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে দলের উচ্চ নেতৃত্ব দু’পক্ষকেই সতর্ক করে দিয়েছেন। এলাকার প্রবীণ তৃণমূল নেতা পরেশনাথ চক্রবর্তীকে ব্লকের চেয়ারম্যান মনোনীত করে তাঁর অনুমতি ছাড়া যেন কোনও সভা না হয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বনমালীবাবু ও মানগোবিন্দবাবুরা অবশ্য এই রকম কোনও বৈঠকের কথা মানতেই চাননি!
আসানসোল পুরসভা জয়ের রেশ নিয়েই সেখানে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। আসানসোলে মেয়র পারিষদ কারা হবেন, তা স্থির করতে এলাকার বিধায়কদের প্রত্যেককে প্রাথমিক ভাবে দু’জনের নাম দিতে বলা হয়েছে। আগামী সোমবার মেয়র পারিষদ ও বরো চেয়ারম্যানের নাম ঠিক করা নিয়ে ফের বৈঠক হবে। নানা কারণে আসানসোলে দলীয় কোন্দল দীর্ঘ দিনের। এ বার নবগঠিত আসানসোল পুর-নিগমের ভোটে বড় ব্যবধানে জয় পেলেও সেই কোন্দলে লাগাম পড়েনি। বরং, এ বার প্রাক্তন মেয়র ও বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে জিতেন্দ্র তিওয়ারি মেয়র হওয়ায় গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। তাপসবাবুর অনুগামীদের ক্ষোভের আঁচ পেয়েই সংশ্লিষ্ট সকলকে কলকাতায় তলব করে তাঁদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।