TMC

রাজ্যের পাওনা চেয়ে পথে তৃণমূল, বামফ্রন্টও

একশো দিনের কাজে কেন্দ্রের বরাদ্দ কমানোর প্রতিবাদে এবং ওই প্রকল্পের বকেয়া মেটানোর দাবিতে একই সময়ে কলকাতা এবং রাজ্যে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্টও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪৬
Share:

কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ২৯ ও ৩০ মার্চ কলকাতায় ধর্নায় বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’কে দলের অস্ত্র করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না কর্মসূচির দু’দিন রাজ্য জুড়ে পথে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার এই অভিযোগ তুলেই ২৯ ও ৩০ মার্চ কলকাতায় ধর্নায় বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দু’দিনই রাজ্যের সব ব্লকে ধর্না কর্মসূচিতে থাকবেন তৃণমূলের নেতা, কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা। একশো দিনের কাজে কেন্দ্রের বরাদ্দ কমানোর প্রতিবাদে এবং ওই প্রকল্পের বকেয়া মেটানোর দাবিতে একই সময়ে কলকাতা এবং রাজ্যে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্টও।

Advertisement

রাজ্যে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দ নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের টানাপোড়েন চলছে দীর্ঘদিন। আবাস যোজনা ও একশো দিনের কাজে প্রাপ্য আটকে রাখার সেই অভিযোগকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনৈতিক মঞ্চে নিয়ে যেতে চলেছে রাজ্যের শাসক শিবির। মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নার দু’দিন মমতা গোটা দলকে এই কর্মসূচির সঙ্গে জুড়ে দিতে চাইছেন। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য শুক্রবার বলেন, ‘‘রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতে কেন্দ্রীয় সরকার এই বঞ্চনা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী যখন কলকাতায় ধর্নায় বসে থাকবেন, তখন রাজ্য জুড়ে দল একই কর্মসূচি পালন করবে।’’

বামফ্রন্টের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ যে সব প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা দিতে গড়িমসি করছে, তার প্রতিবাদ হওয়া দরকার। শহরে মুখ্যমন্ত্রীর ধর্না চলাকালীনই আগামী ২৯ তারিখ রামলীলা পার্ক থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল এবং বিক্ষোভ-সভা করবে বামেরা। পুলিশ অনুমতি না দিলে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। ব্লকে ব্লকে কর্মসূচি হবে ২৮ তারিখ। জেলা স্তরে ওই দাবিতে বামেদের কর্মসূচি থাকবে ৩০ তারিখ। বিমানবাবু বলেন, ‘‘গ্রামের সাধারণ মানুষের রুটি-রুজির প্রশ্নে একশো দিনের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া এবং কাজের টাকা আটকে রাখা জনস্বার্থ-বিরোধী। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ কেন্দ্র বা বিজেপি বারেবারেই এই প্রকল্পে দুর্নীতির কথা বলেছে। সেই প্রসঙ্গে বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতির অভিযোগ যেখানে আছে, সেখানে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক। কাজের বিনিময়ে মানুষের যে টাকা ন্যায্য পাওনা, তা আটকে থাকবে কেন?’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলের কর্মসূচির সময়ে বামেদের এই পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস এবং বামেরা হল স্বাভাবিক মিত্র! তাই বামেরাও রাজপথে নামবে, এটাই তো স্বাভাবিক!’’ মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নার সময়ে পাল্টা ধর্নার ডাক দিয়েছে বিজেপিও। তবে তাদের হাতিয়ার তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ।

দলের তরফে এক বিবৃতিতে এ দিন তৃণমূল দাবি করেছে, আবাস যোজনায় কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে লিখিত ভাবে জানিয়েও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের প্রাপ্য ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা দিচ্ছে না। তার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ আবাস যোজনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে সাধারণ মানুষকে আমরা কেন্দ্রের এই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কথাই জানাব।’’ সেই সঙ্গেই তৃণমূলের বক্তব্য, একশো দিনের কাজের নিশ্চয়তা আইন অনুযায়ী কাজ করার ১৫ দিনের মধ্যে পারিশ্রমিক দিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু কেন্দ্র গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাজ্যের প্রাপ্য সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই বিষয়টিকেই দলের পক্ষে প্রচারের মূল বিষয় হিসেবে তুলে ধরতে এ নিয়ে একযোগে পথে নামছে তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন