2026 West Bengal Assembly Poll

বিধানসভায় ১ লক্ষ ভোটে জয়ই লক্ষ্য! সর্বোচ্চ লিড দিলেই লাখ টাকা ঘোষণা তৃণমূল বিধায়কের

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্র থেকে পরেশ প্রায় ৩৬ হাজার ভোটে জয় পেয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমাকে প্রায় ৭০ হাজার ভোটে লিড দিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫ ২২:৫১
Share:

ক্যানিংয়ে তৃণমূলের কর্মিসভায় ভাষণ দিচ্ছেন পরেশরাম দাস। — নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভা নির্বাচনের এখনও এক বছর বাকি। তবে এখন থেকেই জয়ের ‘ক্ষেত্র’ তৈরি করতে তৎপর ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস। রবিবার এক কর্মিসভা থেকে ওই বিধায়কের ঘোষণা, আগামী বছরের ভোটে তাঁকে বিধানসভা কেন্দ্রের যে অঞ্চল সর্বোচ্চ লিড দেবে, সেখানকার কর্মীরা পাবেন এক লক্ষ টাকা। এ নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বিজেপির দাবি, এ ভাবে আসলে দলীয় কর্মীদের বুথ লুট করার বার্তা দিচ্ছেন ওই নেতা। তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা সেই কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁর দাবি, পরেশ যা বলেছেন তা দল সমর্থন করে না। যদিও পরেশ জানিয়েছেন, বিধায়ক হয়ে যে ভাতা পাবেন, তা-ই পুরস্কার হিসাবে দেবেন কর্মীদের। তাঁদের ভাল করে সংগঠন করার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিতেই এই ঘোষণা।

Advertisement

রবিবার ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনী হাইস্কুলের মাঠে ছিল তৃণমূলের কর্মিসভা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শওকত, ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ-সহ তৃণমূলের অন্য নেতারা। সেই মঞ্চেই ভাষণ দেওয়ার সময়ে পরেশ দলের কর্মীদের টাকার ‘প্রলোভন’ দেখান বলে অভিযোগ উঠেছে।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্র থেকে পরেশ প্রায় ৩৬ হাজার ভোটে জয় পেয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমাকে প্রায় ৭০ হাজার ভোটে লিড দিয়েছে। পরেশ রবিবারের কর্মিসভা থেকে বলেন, ‘‘এ বার এক লক্ষ ভোটে জেতাই লক্ষ্য। ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ১১টি অঞ্চল রয়েছে। ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী, যে অঞ্চল সব থেকে বেশি লিড দেবে সেই অঞ্চলকে ১ লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লিড যারা দেবে তাদের ৭৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ লিড যে অঞ্চল দেবে, তাদের ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেব। পাশাপাশি, যে বুথ সব থেকে বেশি লিড দেবে, সেই বুথের সভাপতি এবং সদস্যদের ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেব।’’

Advertisement

পরেশের এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, পরেশের এই বক্তব্য ‘ভয়ঙ্কর’। এর ফলে ভোটে কারচুপি বৃদ্ধি পাবে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুনিপ দাস বলেন, ‘‘পরেশ নিজের দলের কর্মীদের টাকার প্রলোভন দেখাচ্ছেন। তিনি বার্তা দিতে চাইছেন যে, আগামী বিধানসভা ভোটে কর্মীরা যাতে বুথ লুট করেন।’’ তাঁর প্রশ্ন, পরেশ এত টাকা কোথায় পাচ্ছেন? সেটাও দেখা দরকার।

বিধায়ক আর্থিক পুরস্কারের কথা ঘোষণা করলেও তৃণমূল তাতে সমর্থন করে না বলেই জানান শওকত। তিনি বলেন, “ এটা সম্পূর্ণ পরেশের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এই বিষয়টি আমরা সমর্থন করি না।”

এ প্রসঙ্গে পরেশ বলেন, “আমি যে ভাতা পাই, তা এলাকার দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য, দরিদ্র মানুষের সাহায্যের জন্য ব্যয় করি। চলতি বিধানসভার শেষে যে ভাতা পাব, সেই ভাতাই দলের কর্মীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে দেব। কারণ তাঁরাই আমায় এই জায়গায় এনেছেন। দলের কর্মীরা যাতে আরও ভাল করে দলের সংগঠনে জোর দেয়, সেই কারণেই এই ঘোষণা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement