সুসময়: রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ।
ফেলে-ছড়িয়েও তৃণমূলের ‘দাদাগিরি’ নিশ্চিত ছিল এ বারের রাজ্যসভা ভোটে। হলও তাই। শুধু বিঁধে রইল দলের দুই বিধায়কের ভোট নষ্ট হওয়ার কাঁটা। এক জন রাজ্যের মন্ত্রী জাকির হোসেন, অন্য জন মৃগেন মাইতি।
বর্ষীয়ান মৃগেনবাবুর হাত কেঁপে ভোট নষ্ট হয়। যা জেনে দলের অন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ‘‘ভোটের সময়ই হাত কাঁপে! অন্য সময় তো হয় না।’’ জাকির হোসেনের ক্ষেত্রে অবশ্য ভোটদানের প্রক্রিয়া বুঝতে ‘ভুল’ হয়েছিল বলে দলের দাবি। চার দিন দফায় দফায় বৈঠক করে বিধায়কদের সব কিছু বোঝানোর পরেও এক জন মন্ত্রীর এই ভুল হল কেন, সে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পরিষদীয় দলের অন্তত আধ ডজন নেতা লেগে থাকলেও ভোট শুরুর ঘণ্টা দুই পরেই গুঞ্জন শুরু হয় মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেনবাবুকে নিয়ে। তাঁর ভোট দেওয়ার কথা ছিল নাদিমুল হককে। অসুস্থতার কারণে তাঁর হাত কেঁপে গিয়েছে শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন এই অংশের দায়িত্বে থাকা সমীর চক্রবর্তী। তার পরেই দলের কাছে খবর আসে দলের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ‘চিহ্ন’ ভুল করেছেন জাকির। বিধানসভার কাউন্সিল চেম্বারে তৃণমূল পরিষদীয় দলের অস্থায়ী শিবিরে ডাকা হয় জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকিরকে। কথা বলে তাপস রায় বুঝতে পারেন জাকিরের ভোটটিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আরও দুই বিধায়কের ভোট নিয়েও সংশয় তৈরি হয়। দুই ২৪ পরগনার দায়িত্বে থাকা তমোনাশ ঘোষ খোঁজ করতে শুরু করেন বাসন্তীর বিধায়ক গোবিন্দ নস্করের হাত কতটা কেঁপেছে। দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ জানতে ছোটেন হাড়োয়ার হাজি নুরুল ব্যালটে ঠিক কোন চিহ্ন দিয়েছেন। পরে অবশ্য দেখা গিয়েছে, ওই ভোট দু’টি বাতিল হয়নি।
আরও পড়ুন: ‘কাজ করছিস, না শুধু প্রেম’, শোভনকে মমতা
বেলা তিনটে নাগাদ ভোট দিতে আসেন মমতা। দলের নির্ধারিত তালিকা একটু বদলে তিনি শান্তনু সেনের পরিবর্তে ভোট দেন শুভাশিস চক্রবর্তীকে। কংগ্রেসকে দেওয়ার জন্য যে পাঁচটি ভোট নির্দিষ্ট ছিল, তার এক জন ছিলেন মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু। বামেরা তাদের ৩০টি ভোট অটুট রেখেছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তিনটি ভোটের একটি কংগ্রেসকে দিতে বলেছিল তৃণমূল। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মোর্চার তিন বিধায়কই তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব।