বিধাননগরে শাসক দলের গোষ্ঠী-কোন্দল নিয়ে এর আগেও মুখ খুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন মুকুল ঘনিষ্ঠ রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। হোলির দিনে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং রাজ্যের একাধিক শিল্পপতির সামনে ফের মুখ খুললেন ওই বিধায়ক। বিধাননগরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাজির শিল্পপতি এবং অবাঙালি সম্প্রদায়ের বহু মানুষের উদ্দেশে সব্যসাচীবাবু শুক্রবার বলেছেন, “চাল ছাড়া খাবার হয় না। তেমনি রাজ্যে তৃণমূল ছাড়া ভাবা যায় না। তবে চালে অনেক সময় কাঁকর থাকে, যা বেছে খেতে হয়। তেমনি দলে কাঁকর থাকলে তা সরাতে হলে সরান। কিন্তু দলকে সরাবেন না!”
তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে সিবিআই তলব করার আগে সব্যসাচীর বেশ কিছু মন্তব্য নিয়ে সরগরম হয়েছিল রাজনীতি। তবে বিক্ষুব্ধ হিসেবে এই বিধায়ককে শাস্তি দেওয়ার পথে হাঁটেননি তৃণমূল নেত্রী। বরং, বনগাঁ লোকসভার উপনির্বাচনে অন্য নেতাদের সঙ্গে সব্যসাচীকেও দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত বিধাননগর পুর-নিগম তৈরি হলেও সব্যসাচীকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। এমতাবস্থায় তাঁর এ দিনের মন্তব্যে ফের জল্পনা তৈরি হয়েছে।
সব্যসাচীর এ দিনের আবেদনের প্রত্যুত্তরে বেশ কয়েক জন শিল্পপতিও তাঁদের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। যদিও দলের মধ্যে ‘কাঁকর’ বলতে কাদের বোঝাচ্ছেন, তা স্পষ্ট করেননি বিধায়ক। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, “একটি সম্প্রীতি উৎসব ছিল। সেখানে এই মন্তব্য করেছি। কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন, তা আপনাদের বিষয়।” সব্যসাচী দলে মুকুল-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। যদিও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতেও সক্রিয় হয়েছেন তিনি। দলের একাংশের ধারণা, বিধাননগর-নিউটাউনের রাজনীতিতে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন সব্যসাচী। অতীতে বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু ও বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর সঙ্গে একাধিক বার বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে ভাইস-চেয়ারম্যান সব্যসাচীর। এমনকী, প্রকাশ্যে দুই বিধায়কের উপস্থিতিতে অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষও ঘটেছে। ‘কাঁকর’-মন্তব্যের সঙ্গে বিধাননগর-নিউটাউনে তৃণমূলের দলীয় কোন্দলেরই যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছে দলের একাংশ।