Soumitra Khan

বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খান, রাজ্যে চাঙ্গা গেরুয়া শিবির

সৌমিত্র খান যে দলবদল করতে পারেন, তা নিয়ে গুঞ্জন মাসখানেক ধরেই বাড়ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর একটি পোস্ট বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রকাশ্যে এনেছিল। রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে তৈলমর্দনই একমাত্র পথ— তৃণমূল সাংসদের পোস্টটির সারকথা ছিল এই রকমই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:১৯
Share:

বিজেপির ধর্মেন্দ্র প্রধান ও মুকুল রায়ের সঙ্গে সৌমিত্র খান। ছবি সৌজন্য: টুইটার।

জল্পনার আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়েছিল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই। বুধবার দুপুরে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খান বুঝিয়ে দিলেন, জল্পনার এক বর্ণও মিথ্যা ছিল না। এ দিন নয়াদিল্লিতে বিজেপি সদর দফতরে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগদানের কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূল সাংসদ। সৌমিত্রর এই দলবদল নিঃসন্দেহে তৃণমূলের জন্য বড় অস্বস্তি। লোকসভা নির্বাচনের কাছাকাছি এসে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সঙ্ঘাত যখন তুঙ্গে, তখন তৃণমূলের সংসদীয় দলে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপি উল্লসিত। এই প্রথম তৃণমূলের কোনও লোকসভা সদস্য বিজেপিতে যোগ দিলেন।

Advertisement

সৌমিত্র খান যে দলবদল করতে পারেন, তা নিয়ে গুঞ্জন মাসখানেক ধরেই বাড়ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর একটি পোস্ট বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রকাশ্যে এনেছিল। রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে তৈলমর্দনই একমাত্র পথ— তৃণমূল সাংসদের পোস্টটির সারকথা ছিল এই রকমই। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছে এবং তিনি ক্রমশ বিজেপির কাছাকাছি যাচ্ছেন— এমন তত্ত্বও ভাসছিল রাজনীতির হাওয়ায়।

এর পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সৌমিত্র খান সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় বিস্ফোরণ ঘটান। বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুকোমল দাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই সক্রিয় ভাবে তৃণমূলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলছিল রাজ্য বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু একাধিক বার প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেছিলেন যে, বিষ্ণুপুর মহকুমায় তৃণমূলের নিয়ন্ত্রক তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা নন, নিয়ন্ত্রক হলেন এসডিপিও। বিজেপির নিশানায় থাকা সেই এসডিপিও-র বিরুদ্ধেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তোপ দাগেন সৌমিত্র। তিনি জানান যে, তাঁর আপ্ত সহায়ক গোপীকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন এসডিপিও সুকোমল দাস। সাংসদ দাবি করেন যে, তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হতে পারে, এমন আশঙ্কাও সাংসদ প্রকাশ করেন। অবিলম্বে সুকোমল দাসের অপসারণ দাবি করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের কৈফিয়তও চান। আপ্ত সহায়ককে অবিলম্বে ছাড়া না হলে তিনি নিজের নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে থানা ঘেরাও করবেন, এমন হুঁশিয়ারিও সৌমিত্র দেন। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার অবশ্য বিষ্ণুপুরের এসডিপিও-র বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এর পরেই আজ বিজেপি-তে যোগদানের কথা ঘোষণা করে দিলেন সৌমিত্র খান।

Advertisement

বিজেপির কার্যালয়ে সৌমিত্র খান। ছবি সৌজন্য: টুইটার।

আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ, আপ্তসহায়ককে ‘অপহরণ’-এর অভিযোগ এসডিপিও-র বিরুদ্ধে

কেন দল ছাড়লেন সৌমিত্র? সাংসদ বললেন, ‘‘তৃণমূল এখন পিসি-ভাইপোর দল হয়ে গিয়েছে। ওই দলে আর কারও কোনও গুরুত্ব নেই। পিসি-ভাইপো মিলে গোটা বাংলায় পুলিশ রাজ কায়েম করেছেন। বাংলায় কোনও গণতন্ত্র নেই। এখন শুধু পুলিশতন্ত্র চলছে।’’ দলত্যাগী সাংসদের তোপ, ‘‘আমি একজন সাংসদ, আমারই জীবনের নিরাপত্তা নেই। তা হলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা ভাবুন!’’

আরও পড়ুন: জেলাশাসকের মারের পর এ বার পুলিশের চাপ? ‘নিখোঁজ’ বিনোদের সন্ধান মিলল রাতে

সৌমিত্র আরও দাবি করেছেন যে, তিনি একা নন। তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত আরও অনেক জনপ্রতিনিধি বিজেপি-তে যোগ দেবেন। তাঁরা কারা, সে বিষয়ে সৌমিত্র অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। নয়াদিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় সদর দফতরে ধর্মেন্দ্র প্রধান, মুকুল রায় এবং রাহুল সিংহ এ দিন সৌমিত্র খানকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সৌমিত্রর বিজেপিতে যোগদানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর হাতে বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদও তুলে দেওয়া হয়েছে।

(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরপেতে চোখ রাখুন আমাদেররাজ্যবিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন