এসএসকেএম নিয়ে আসা হল সৃঞ্জয় বসুকে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
মাঝে-মধ্যে চোখের সামনে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে। মাথা ঘুরছে, নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার জোগাড়। ঘুমোতেও পারছেন না। ফলে সারদা-কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বসুকে সোমবার দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগের কেবিনে ভর্তি করা হল।
সিবিআই জেরা করতে পারে, এমন আশঙ্কা তৈরি হওয়ার পরে মিন্টো পার্কের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন মন্ত্রী মদন মিত্র। সেখান থেকে চলে যান এসএসকেএমে। মদনবাবু গত সপ্তাহে এসএসকেএম থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অন্য দিকে সৃঞ্জয়বাবু দিন দু’য়েক আগে আদালতে আবেদন করে বলেছিলেন, তাঁর বয়স কম, বিস্তর শারীরিক সমস্যাও রয়েছে। তাই তাঁকে যেন গৃহবন্দি করে রাখা হয়। এর পরেই তাঁর এসএসকেএম গমন।
সৃঞ্জয়বাবু কতটা অসুস্থ? কেন ভর্তি করা হল? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বিশেষ স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। এসএসকেএমের সুপার দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উনি ভর্তি হয়েছেন জানি। তবে কী হয়েছে বলতে পারব না। খোঁজ নিইনি।” তা হলে কি হাসপাতালের প্রশাসনিক প্রধানকে অন্ধকারে রেখেই সাংসদকে ভর্তি করা হল? সুপারের জবাব, “মেডিক্যাল বোর্ড করে দিয়েছি। তারাই দেখবে, কী হয়েছে।” এসএসকেএম-সূত্রের খবর: ওই বোর্ডে আছেন হৃদ্রোগ-বিশেষজ্ঞ শিবানন্দ দাস, এন্ডোক্রিনোলজি’র শুভঙ্কর চৌধুরী, বক্ষ বিভাগের সোমনাথ কুণ্ডু, মেডিসিনের নির্মলেন্দু সরকার, অস্থি বিভাগের আনন্দকিশোর পাল ও নিউরোলজি’র অসিত সেনাপতি। সৃঞ্জয়বাবু ভর্তি রয়েছেন শিবানন্দবাবুর তত্ত্বাবধানে। প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমি রোগীকে পরীক্ষা করেছি। আমার যা মত, সুপারকে জানিয়েছি। তাঁর থেকে জেনে নিন। আমি কিছু বলতে পারব না।”
পিজি-র খবর, বেলা ১২টা নাগাদ সৃঞ্জয়বাবু ভর্তি হন। হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্র জানান, উনি মরবিড ওবেসিটি-র রোগী। অত্যধিক ওজন। সঙ্গে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন রয়েছে, ঘাড়ে স্পন্ডিলোসিস। দীর্ঘদিন হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। “এই ধরনের রোগীদের সামান্য শারীরিক সমস্যা শুরু হলেই সাবধান হওয়া উচিত। কারণ, যখন-তখন অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে।” বলছেন প্রদীপবাবু। ওঁর বক্তব্য, “সৃঞ্জয়বাবু সিবিআই-কে জানান, মাঝে-মধ্যে ব্ল্যাক আউট হয়ে যাচ্ছে। মাথা ঘুরছে। রক্তচাপও বেশ বেশি ১৫০/১১০।”
এই সব লক্ষণ দেখেই কার্ডিওলজির ডাক্তারেরা ওঁকে ভর্তি করে নিয়েছেন বলে জানান অধ্যক্ষ। হাসপাতাল-সূত্রের খবর: সৃঞ্জয়বাবুর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করেছেন, কেবিনের চিকিৎসা-কর্মীদের সঙ্গে গল্প-গাছাও করেছেন। অক্সিজেন দিতে হয়নি। ইসিজি, এক্স-রে, ইকো এবং কিছু রুটিন রক্ত-পরীক্ষা হয়েছে।