আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক। —নিজস্ব চিত্র।
আবারও বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল বিজেপিশাসিত ওড়িশায়। সম্প্রতি মালদহের গাজলের আদিবাসী যুবক বিনয় বেসরা ওড়িশায় মারধরের শিকার হয়েছেন। অভিযোগ, শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ই তাঁকে শারীরিক ভাবে নির্যাতিত হতে হয়েছে। মঙ্গলবার বিধানসভায় বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনে আলোচনা শুরু হয়েছে, আর সেই দিনই আরও এক বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলার অভিযোগ সামনে এল।
আক্রান্তের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ দিন আগে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে রুজির সন্ধানে ওড়িশায় যান বিনয়। সেখানে গ্রামবাসীরা প্রথমে তাঁকে আটক করেন, কারণ সেখানে তিনি বাংলায় কথা বলছিলেন। এর পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছোয়। অভিযোগ, গ্রামবাসী এবং পুলিশের মিলিত নির্যাতনের শিকার হন ওই যুবক। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, অকথ্য মারধর সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে এবং প্রাণ বাঁচাতে কোনও রকমে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন । ঘটনার কথা জানার পরেই ওই পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ। পরে পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, “বিজেপি বাংলাভাষী মানুষদের কখনওই রেহাই দেয় না। মাতুয়া, রাজবংশী কিংবা আদিবাসী—যে সম্প্রদায়েরই মানুষ বাংলায় কথা বলুক না কেন, বিজেপিশাসিত রাজ্যে তাঁদের উপরেই নেমে আসছে নির্যাতন।” তিনি আশ্বাস দিয়েছেন আক্রান্তের পরিবারের পাশে সবরকম ভাবে পাশে থাকবেন তিনি।
এমনিতেই বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক এবং বাংলা ভাষায় কথা বলা মানুষদের উপর আক্রমণের ঘটনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাভাষীদের উপর এই হামলা কোনও ভাবেই সহ্য করা হবে না। বাংলাবিরোধী মানসিকতার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন । তাই গান্ধী মূর্তির পাদদেশে গত দু’মাস ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত করছিল শাসকদল । কিন্তু সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সেই মঞ্চ খুলে দেওয়ার অভিযোগ এনে মঙ্গলবার ডোরিনা ক্রসিংয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি করছে তৃণমূল । আবার বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে বক্তৃতা করবেন বলেই তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর । প্রসঙ্গত, আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য শ্রমশ্রী প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মমতা ।