ধন্যবাদ দিলেন সিঙ্ঘভি, আশ্বাস মমতার

কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের ভাবনা ছিল অন্য রকম। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের শীর্ষনেতৃত্বের যোগাযোগও হয়। এবং তার পরে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির নাম সামনে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

বিধানসভায় অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। ছবি: সুমন বল্লভ

প্রদেশ কংগ্রেস ও পরিষদীয় দল উভয়েরই ঘোষিত অবস্থান ছিল রাজ্যসভার ভোটে তৃণমূলের সমর্থন না নেওয়া। তাদের হিসেব ছিল একা কংগ্রেসের হাতে পঞ্চম আসনের জন্য সব থেকে বেশি ভোট থাকবে। যদি বামেদের সমর্থন পাওয়া যায় তাহলে সোনায় সোহাগা।

Advertisement

কিন্তু কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের ভাবনা ছিল অন্য রকম। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের শীর্ষনেতৃত্বের যোগাযোগও হয়। এবং তার পরে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির নাম সামনে আসে। তৃণমূলনেত্রী তাঁকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। এখন অভিষেকের জয় কার্যত সময়ের অপেক্ষা।

এটা কি আগামী দিনে বৃহত্তর রাজনৈতিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত? শনিবার কলকাতায় এসে তেমনই আভাস দেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি বিরোধী রাজনীতির স্বার্থেই রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সমর্থন নিয়েছে কংগ্রেস।

Advertisement

তবে রাজ্যসভার ভোটে দু’দলের এই সম্পর্ককে অবশ্য এখনই জোট বলতে রাজি নন কংগ্রেস প্রার্থী। তাঁর কথায়, ‘‘অঙ্ক, ইতিহাস, ভুগোল—সব দিক থেকেই রাজ্যে বিজেপি বিরোধিতার জায়গা রয়েছে। সময় ও বিষয় বিবেচনা করে আগেও এইরকম সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ এ দিন কলকাতায় পৌঁছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন অভিষেক। বিকেলে ফোন করে প্রার্থী হিসাবে তাঁকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। এই ভোটে তৃণমূল তাঁকে সমর্থন করায় তৃণমূলনেত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। যে কোনও প্রয়োজনে তাঁকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন মমতা।

এদিকে এই পরিস্থিতিতে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে রাজ্য কংগ্রেস। তবে তা আড়াল করেই এদিন দলীয় প্রার্থীর মনোয়ন সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে ছিলেন কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা আবদুল মান্নান, বিধায়ক অসিত মিত্র, মহম্মদ আখরুজ্জামান। পরিষদীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে সিঙ্ঘভি অবশ্য বলেন, ‘‘এই সমর্থনের ফলে রাজ্যে বিরোধী হিসাবে কংগ্রেসের ভুমিকা বদল হবে না। গণতন্ত্রে বিরোধীরা যা করে, দল তাই করবে।’’

পাশাপাশি অবশ্য অন্য একটি প্রশ্নও রাজনৈতিক মহলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা হল অভিষেককে সমর্থনের সিদ্ধান্ত কি তৃণমূলের রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ? না কি অন্য কোনও বিকল্প হাতে না থাকা? অনেকের মতে, পঞ্চম আসনের জন্য কংগ্রেসের হাতে সব থেকে বেশি ভোট থাকায় অভিষেকের জেতা কঠিন হত না। তৃণমূল সেই ‘সম্ভাব্য জয়ে’র পরিস্থিতিকে নিজেদের অনুকূলে টেনে নিতে তাঁকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিল।

তৃণমূল শিবির কিন্তু এই যুক্তি মানে না। অভিষেককে সমর্থন করার পিছনে তাঁর সঙ্গে আইনজীবী হিসাবে তৃণমূলের ব্যক্তিগত সৌজন্যের কথা শুক্রবারই বলেছেন মমতা। আর তৃণমূলের হাতে বিকল্প না থাকার যুক্তি উড়িয়ে দলের এক শীর্ষনেতার বক্তব্য, কংগ্রেসের ক’টা ভোট ভেঙে যেত সে খবর ওরা নিজেরাও জানে না। তাই পঞ্চম আসনে তৃণমূল প্রার্থী দিলে সে প্রার্থীকে কী করে জেতাতে হয় সেটাও ভাবা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন