পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভার আপাতত যাঁদের হাতে থাকল, তাঁরা কেউ ছাত্র নন। তিন সদস্যের এই পরিচালন কমিটির শীর্ষে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সহযোগী হিসাবে থাকবেন যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরামর্শদাতা হিসেবে থাকছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
কলেজে ভর্তি কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জয়া দত্তকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক মাস আগে এই নির্দেশ দেওয়ার সময়ে বলা হয়েছিল, দশ দিনের মধ্যে নতুন সভাপতি ঠিক করে দেওয়া হবে। হয়নি। জয়া অবশ্য কয়েক দিন আগেও দাবি করেছেন, কেউ তাঁকে পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেনি।
ছাত্র সংগঠনের আসন্ন প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে শনিবার দলীয় নেতৃত্বের প্রস্তুতি বৈঠকে জয়া নেতাদের সারিতে ছিলেন না। তিন শীর্ষনেতার সঙ্গে একসারিতে বসেছিলেন সংগঠনের দুই প্রাক্তন সভাপতি বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও অশোক রুদ্র। সেখানেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কাজকর্ম পরিচালনার জন্য আপাতত তিন সদস্যের কমিটি ঘোষণা হয়। বৈঠকে দলের এই তিন নেতাই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ছাত্র সংগঠনের এই কর্মসূচির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। সেই সূত্রেই অভিষেক জানান, সংগঠনের পরবর্তী সভাপতি কে, তা নিয়ে কারও ভাবার দরকার নেই। উপযুক্ত সময়ে দলনেত্রী তা জানিয়ে দেবেন। ২৮ অগস্টের কর্মসূচি পর্যন্ত এই পরিচালন ব্যবস্থা থাকবে বলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, এই প্রথম রাজ্য সভাপতি ছাড়াই সংগঠনের কর্মসূচি পালিত হবে।
কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত অনিয়মের কথা ওঠে বৈঠকে। তখন পার্থবাবু ফের জানান, হাতে গোনা কয়েক জনের জন্য অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যে সব জায়গায় ভর্তি বাকি আছে, সেখানে তা হবে মেধার ভিত্তিতেই। সেই সঙ্গে নেতারা এ কথাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে সামান্য অংশের জন্য সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, তাঁরা ছাড় পাবেন না। উপস্থিত ছাত্রনেতাদের তিনি জানিয়ে দেন, ছাত্র সমাবেশের পরে দুর্গোৎসব এসে যাবে। তার পরে দলের ব্রিগেড কর্মসূচি এবং লোকসভা নির্বাচন। ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়ে এখন কাউকে মাথা ঘামাতে হবে না। ছাত্রনেতাদের একাংশের ধারণা, এ বারেও কলেজে নির্বাচন যে অনিশ্চিত, পার্থবাবুর এই নির্দেশে তা স্পষ্ট।
সাংগঠনিক শৃঙ্খলার উপরে জোর দিয়েছেন তিন নেতাই। সেই সূত্রেই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রতবাবু সংগঠনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সম্পর্কে জেলার নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। সংগঠনে ‘দাদা-দিদির’ সঙ্গ ছাড়তে হবে। দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূল ও শাখা সংগঠনে সকলকে থাকতে হবে দলনেত্রীর মত ও পথেই। যে সব জেলায় ছাত্র সংগঠনে সভাপতি বদল করা হয়েছে, সেখানে অন্যদের তৃণমূল নেতৃত্বের পরামর্শেই কাজ করতে বলা হয়েছে।