ফের টিএমসিপির সভাপতি পদে বহাল হতে পারেন জয়া দত্ত? ফাইল চিত্র।
গত বছরও কলেজে কলেজে টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তিতে নাম জড়িয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি)। এ বার যাতে তেমন কিছু না হয় এবং সংগঠনের কেউ যাতে সেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য সতর্ক করে দিলেন টিএমসিপির রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত। একই সঙ্গে ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের কাছেও তাঁর আবেদন, ‘‘কাউকে টাকা দেবেন না।’’
ফেসবুকে সোমবার জয়া লিখেছেন, ‘‘যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। কেউ প্রলোভনে পা দেবেন না।’’ রাজ্যের সব কলেজে অনলাইনে ছাত্র ভর্তির ব্যবস্থা থাকলেও টাকার বিনিময়ে ভর্তি করে দেওয়ার দুর্নীতি যে রাজ্যের অনেক কলেজেই বছর বছর পোহাতে হচ্ছে, তা স্বীকার করে নিয়ে জয়া বলেন, ‘‘টিএমসিপি-র নাম ভাঙিয়ে অনেকেই ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। গত বছর এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে দল অভিযুক্তদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল। এ বার টিএমসিপির কারও নামে অভিযোগ উঠলে দল থেকে তাঁকে বরখাস্ত করা হবে।’’
নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে বা ফেসবুকে যোগাযোগ করলে প্রেসিডেন্সি, বেথুন, সুরেন্দ্রনাথ স্কটিশ চার্চ, মৌলানা আজাদ কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার ‘টোপ’ দেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। যে কোনও বিষয় নিয়ে অনার্স পড়তে চাইলে, তা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে বলেও ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এ সব পোস্টকে গুরুত্ব না দিয়ে পড়ুয়াদের জন্য জয়ার পরামর্শ, ‘‘ওয়েবসাইট দেখ, ফর্ম ফিলাপ কর।’’
এখন রাজ্যের প্রায় সব কলেজের ছাত্র সংসদই টিএমসিপির দখলে। ফলে ছাত্র সংসদও যাতে ‘দাদাগিরি’ দেখাতে না পারে, তার জন্যও সংগঠনের সদস্যদের সতর্ক করা হয়েছে বলে টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি। ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের সাহায্যের নামে প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করতে টিএমসিপির কোনও হেল্প ডেস্ক এ বার থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন টিএমসিপির কোনও সদস্য যাতে নবাগত পড়ুয়াদের উপর ‘কর্তৃত্ব’ কায়েমের চেষ্টা না করে, সে জন্য দিন কয়েকের মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দলে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে বলে টিএমসিপি সূত্রের খবর।
টিএমসিপি নেত্রী জয়ার সতর্ক-বার্তা নাম কে ওয়াস্তে বলে মন্তব্য করেছেন এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, ‘‘টিএমসিপির এই মুখোশটি খুবই সুন্দর। কিন্তু এতে ভবি ভুলছে না। তৃণমূলের প্রতিটি স্তরেই টাকার বিনিময়ে সব কাজ হয়। ভর্তির প্রক্রিয়াটি আর কয়েক দিন গেলেই বুঝতে পারবেন, যে ওরা মুখে যা বলছে, করছে তার ঠিক উল্টো।’’