সমারোহ: তৃণমূলের সমাবেশের আগে ভোজের প্রস্তুতি। রবিবার শিলিগুড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।
বাসমতী চালের ভাত, কাঁচা লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে মুসুর ডাল, আলু দিয়ে বাঁধাকপির তরকারি আর ডিমের ঝোল। মেনু দেখে কাজ যতটা সহজ মনে হচ্ছে, আসলে কিন্তু ততটা নয়। আজ, সোমবার শিলিগুড়িতে তৃণমূল ছাত্র যুব সমাবেশে পাত পড়বে যে অন্তত ৩৫ হাজার জনের। তাই রবিবার বিকেলেই ডিম সেদ্ধ করা হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু দলের প্রায় ৪০ হাজার জনকে এমন ডিম-ভাত খাওয়ানোর পরে হাওড়ার ডুমুরজলায় বিতর্কের মুখে পড়েছিল তৃণমূল। তখন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিবৃতি দিতে হয়। দলের তরফে জানানো হয়েছিল, ওই ডিম-ভাতের জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু শিলিগুড়িতে কোনও টাকা নেওয়া হচ্ছে না। তা হলে খরচ সামাল দেওয়া হচ্ছে কী করে?
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘দলের সকলে মিলে চাঁদা দিয়েছেন। খুব কম খরচে ছিমছাম খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ দল সূত্রের খবর, এই মেনুর জন্যই সব মিলিয়ে কম পক্ষে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হবে। ডিমের দাম সাড়ে চার টাকা করে পড়েছে। সর্ষের তেল ১০০ টাকা করে কেজি। এক এক টিনে ১৬ কেজি। তা আনা হয়েছে ৫০ টিন। চালের দাম ৩৬ টাকা কেজি। ১৪০ বস্তা চাল আনা হয়েছে। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবই মূল দায়িত্বে। তিনি বলেন, ‘‘চাঁদা তো রয়েছে, সেই সঙ্গে অনেক নেতা-কর্মী-শুভানুধ্যায়ী স্বেচ্ছায় চাল, আনাজও জোগাড় করে দিয়েছেন।’’
শিলিগুড়ির মেয়র সিপিএমের নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, তাঁরাও বড় বড় সমাবেশ করেছেন। সেখানেও চাঁদা তুলে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হত।
কিন্তু তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলকে কখনও চাঁদা তুলতে দেখিনি। আসলে যারা টাকা দিচ্ছে, তারা পাল্টা সুবিধা চাইবে।’’ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায়চৌধুরীরও বক্তব্য, ‘‘সিন্ডিকেট রাজের কথা মানুষ জানেন। তাই কী ভাবে টাকা আসছে, তা-ও সবাই বুঝতে পারছেন।’’ গৌতমবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘এত লোক আসছেন দেখে বিরোধীরা ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাই অপপ্রচার করছেন তাঁরা।’’