Amit Shah

শাহকে জবাব, উন্নয়ন প্রচারে মমতা

২৪ ঘণ্টা আগে ‘বাংলার গর্ব মমতা’য় মানুষের আরও কাছে পৌঁছনোর বার্তা দিয়েছিল তৃণমূল। সেই পথেই এ দিন মমতা নতুন একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ০৫:২২
Share:

উত্তর দিনাজপুরের সরকারি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

রবিবার কলকাতায় এসে অনুন্নয়নের অভিযোগে রাজ্য সরকারকে বিঁধতে চেয়েছিলেন অমিত শাহ। মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কারও নাম না-করেই বুঝিয়ে দিলেন, উন্নয়নকেই ভোটপ্রচারে পাখির চোখ করবেন তিনি। এ দিন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা উন্নয়নে বিশ্বাসী। মনে রাখবেন, যত দিন এই সরকার থাকবে, কোনও অত্যাচার ও ভেদাভেদ হতে দেব না।’’

Advertisement

২৪ ঘণ্টা আগে ‘বাংলার গর্ব মমতা’য় মানুষের আরও কাছে পৌঁছনোর বার্তা দিয়েছিল তৃণমূল। সেই পথেই এ দিন মমতা নতুন একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করলেন। তার মধ্যে যেমন রয়েছে বেকারদের জন্য ‘কর্মসাথী’, রয়েছে ‘স্নেহালয়’ বা ‘জয় বাংলা’ও। পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, প্রকল্পের ঘোষণা করে এবং কী ভাবে, তা পাওয়া যাবে, তার সবিস্তার ব্যাখ্যা দিয়ে উন্নয়ন-কেন্দ্রিক প্রচারের সুর বেঁধে দিলেন মমতা। যা শাহের সমালোচনারই জবাব।

মমতা এ দিন জানিয়ে দেন, ওই সব প্রকল্পের সুবিধা মিলবে অনলাইনেই। তিনি বলেন, ‘‘এর-ওর-তার কাছে যেতে হবে না। অনলাইনে আবেদন জানালেই হবে। কোনও সমস্যা হলে ডিএম, এসপি, বিডিও-র কাছে চলে যান। ওঁরা আপনাদের সাহায্য করার জন্যই বসে রয়েছেন।’’ শুধু তা-ই নয়, সভার পরে প্রশাসনিক বৈঠকে ‘কর্মসাথী’ প্রকল্পের জন্য ‘মোবাইল অ্যাপ’ তৈরির কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে কাটমানি-বিতর্কে এর আগে বারবার বিদ্ধ হয়েছে শাসক দল। সরাসরি সেই প্রসঙ্গ না-তুললেও ভবিষ্যতে তা রুখতেই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন দলনেত্রী। একই সঙ্গে বুঝিয়ে দিয়েছেন, পুর ও বিধানসভা ভোটে বিরোধীদের মোকাবিলায় উন্নয়নকেই ‘অস্ত্র’ করেছেন তিনি। যা দেখে দলেরই কেউ কেউ বলছেন, এ যেন সদ্যসমাপ্ত দিল্লি ভোটে কেজরীবালের প্রচার। কেজরীও বিজেপির হিন্দু-মুসলিম প্রচারের মোকাবিলায় নিজের সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকেই তুলে ধরেন। এ দিন মমতার মুখেও মূলত উন্নয়নের কথা। উল্লেখ্য, কেজরী এবং মমতার প্রচারের সুর বেঁধে দেওয়ার ক্ষেত্রে এক জনই— ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর।

মমতা জানান, কর্মসাথী প্রকল্পে বেকাররা ব্যবসা শুরুর জন্য প্রতি বছর এক লক্ষ টাকা করে তিন বছর পাবেন। প্রতি বছর এক লক্ষ মানুষ সেই সুবিধা পেতে পারেন। ‘স্নেহালয়’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এতে গরিবরা ঘর তৈরির জন্য দু’দফায় এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাবেন। তবে ‘বাংলা আবাস যোজনা’র সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।

তফসিলিদের জন্য ‘জয় বাংলা’ প্রকল্প চালুর কথা জানিয়ে মমতা বলেন, ৬০ বছর বয়স হলেই প্রতি মাসের ১ তারিখে তফসিলিরা এক হাজার টাকা করে পাবেন। একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, পরিবারের কোনও এক জনের তফসিলি শংসাপত্র থাকলে বাকিরাও সহজে তা পেয়ে যাবেন। অনলাইনেই ওই আবেদন করা যাবে। ভাতা পাবেন রাজবংশীরাও। বার্ধক্য, প্রতিবন্ধী, বিধবা, লোকশিল্পী ভাতা-সহ অন্য পেনশনও এক হাজার টাকা করা হয়েছে। তা মিলবে প্রতি মাসের ১ তারিখেই। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি রুখতে ‘পথবন্ধু’ মোতায়েন করার কথাও এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী।

সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষ যাতে বঞ্চিত না-হন, সে-দিকেও যে তাঁর নজর রয়েছে, সেই ইঙ্গিত দেন মমতা। এ দিনের সভায় তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভ্যান্স সেল ও দিদিকে বলো-য় কয়েক হাজার মানুষ ফোন করে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বহু লোকের সমস্যা মিটিয়েও দেওয়া হয়েছে।’’ এ দিন মমতার সভা ও বৈঠকে হাজির ছিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন