হিমঘরে আলুর সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

শেষ হতে চলল রাজ্যের হিমঘরগুলিতে আলু রাখার বর্ধিত সময়সীমাও। কিন্তু চাষিদের দুশ্চিন্তা এখনও কাটল না। কারণ, হিমঘরগুলিতে এখনও জমে প্রায় ৮ লক্ষ টন আলু।  কেউ কেউ এখনও অভাবী বিক্রি করে চলেছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৩
Share:

শেষ হতে চলল রাজ্যের হিমঘরগুলিতে আলু রাখার বর্ধিত সময়সীমাও। কিন্তু চাষিদের দুশ্চিন্তা এখনও কাটল না। কারণ, হিমঘরগুলিতে এখনও জমে প্রায় ৮ লক্ষ টন আলু। কেউ কেউ এখনও অভাবী বিক্রি করে চলেছেন।

Advertisement

সমস্যা মেটাতে হিমঘরে আলু রাখার সময়সীমা আরও অন্তত এক মাস বাড়ানোর দাবি তুলেছেন চাষিরা। তাতে বাজারে আলু বিক্রির পথ সুগম হবে এবং ক্ষতি কিছুটা সামলানো যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। এ নিয়ে আজ, শুক্রবার কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত হিমঘর-মালিক ও চাষিদের সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন। তপনবাবু বলেন, ‘‘সব পক্ষের কথা শুনে, চাষিদের ভালর কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’

গত মরসুমে বাড়তি ফলনের জেরেই আলুর বাজার মন্দা। ক’মাস ধরেই জ্যোতি আলু বিকোচ্ছে ৮-৯ টাকা কেজি দরে। চন্দ্রমুখী ১৫-১৬ টাকা কেজি। চাষিরা যে পরিমাণ আলু ওড়িশা, অসম, উত্তরপ্রদেশ বা পঞ্জাবে রফতানি করা যাবে ভেবেছিলেন, তা-ও হয়নি। ওই সব রাজ্যেও গত মরসুমে আলুর ভাল ফলন হয়। ফলে, মাথায় হাত পড়ে এ রাজ্যের চাষির।

Advertisement

নিয়মমতো হিমঘর থেকে আলু বের করার সময়সীমা ৩০ নভেম্বর। কিন্তু তখন রাজ্যের ৪৪০টি হিমঘরে ১৫ লক্ষ টন আলু জমে ছিল। চাষিদের কথা ভেবে ওই সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয় রাজ্য। ওই সিদ্ধান্তে যে তাঁদের কিছুটা সুরাহা হয়েছে, তা মানছেন চাষিরা। এই এক মাসে আলুর চাহিদাও কিছু বেড়েছে। কারণ, পর পর নিম্নচাপের কারণে এ বার ‘জলদি আলু’ (যে আলু খেত থেকে সরাসরি বাজারে চলে যায়) চাষ করতে পারেননি চাষিরা। বাজারে যে আলু আসছে, তার পুরোটাই হিমঘরের। এটা অক্সিজেন জুগিয়েছে চাষিদের।

কিন্তু হিমঘরে আলু রাখার সময়সীমা শেষ হতে আর দু’দিন বাকি। এখনও হিমঘরগুলিতে ৮ লক্ষ টনের কিছু কম পরিমাণ আলু রয়েছে। কাজেই ৩১ ডিসেম্বরের পরে যদি হিমঘর বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে তাঁরা ক্ষতি পোষাতে পারবেন না বলে মনে করছেন চাষিরা।

গোঘাটের কুমুড়শা গ্রামের আলুচাষি সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘সমবায় থেকে ঋণ নিয়ে, স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে ফের চলতি মরসুমে আলু চাষ করেছি। গত মরসুমের জমে থাকা আলু বিক্রি করতে পারলে ক্ষতির বহর কিছুটা কমবে। তাই হিমঘরের সময়সীমা বাড়ানো হোক।’’ পুরশুড়ার আলুচাষি প্রশান্ত ধোলে গত বার ২০ বিঘে জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। তাঁর দাবি, চাষের খরচ এবং হিমঘরের ভাড়া মিলিয়ে ১০ হাজার টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।

একই দাবি তুলেছেন ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ও। তিনি মনে করেন, হিমঘরের সময়সীমা বাড়ানো ছাড়াও সরকার ওই আলু মিড-ডে মিলে ব্যবহার করলে এবং ভিন্‌ রাজ্যে পাঠানোর ক্ষেত্রে গাড়িপিছু ভর্তুকি বজায় রাখলে চাষিদের কপাল থেকে চিন্তার ভাঁজ কিছুটা কমতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন