পুরস্কারপ্রাপ্ত নাটাবাড়ি হাইস্কুল। খুশিতে মিষ্টিমুখ শিক্ষকদের। —নিজস্ব চিত্র।
মাঠে যেন সবুজ গালিচা পাতা। এক দিকে রকমারি ফুলের বাগান। সারি সারি দেবদারু গাছ। অন্য দিকে কিচেন গার্ডেন। ঝাঁ চকচকে স্কুল ভবন। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় নজরদারি। সব মিলিয়ে শহরের নামী স্কুলগুলির সঙ্গে পরিকাঠামো ও সৌন্দর্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। পড়ুয়াদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলও নজরকাড়া। কোচবিহারের প্রত্যন্ত এলাকার নাটাবাড়ি হাইস্কুলের এমন সম্মিলিত কৃতিত্বের স্বীকৃতি দিল রাজ্য সরকার। শিক্ষক দিবসের আগের দিন ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতার নজরুল মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোচবিহারের সেরা হাইস্কুলের পুরস্কার পাচ্ছেন তাঁরা। পুরস্কারের পোশাকী নাম বেস্ট পারফর্মিং স্কুল অ্যাওয়ার্ড। জেলার সেরা প্রাথমিক স্কুল হিসেবে মাথাভাঙার বড়শৌলমারি এপি প্রাথমিক স্কুলও পুরস্কারটি পাচ্ছে।
বুধবার শিক্ষা দফতরের তরফে ওই পুরস্কারের খবর জানিয়ে পাঠানো ইমেল পৌঁছেছে জেলা শিক্ষা দফতরের অফিসে। কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারপার্সন কল্যাণী পোদ্দার বলেন, “ওই দু’টি স্কুল ছাড়াও তিন জন শিক্ষক পুরস্কার পাচ্ছেন। এই পুরস্কার জেলার অন্য শিক্ষক এবং স্কুলগুলিকেও উৎসাহিত করবে। আমরা খুশি।” কোচবিহারের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, “স্কুল দু’টির কর্তৃপক্ষকে পুরস্কারপ্রাপ্তির খবর জানানো হয়েছে। জেলার তিন জন শিক্ষক শিক্ষারত্ন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।” শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, শিক্ষারত্নের তালিকায় রয়েছেন গোপালপুর প্রাথমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক প্রফুল্ল রায়, সিপাহিটারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেন ওঁরাও ও জেনকিন্স হাইস্কুলের সহকারি প্রধানশিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়।
এ দিন ওই পুরস্কার প্রাপ্তির খবর চাউর হতেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের মধ্যে খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়। নাটাবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত সেন, সহকারী প্রধানশিক্ষক অচিন্ত্যকুমার সাহা সহ তিন জনের একটি দল ওই পুরস্কার নিতে বুধবার উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে কলকাতা রওনা হয়েছেন। রঞ্জিতবাবু বলেন, “১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। পঞ্চাশ শতাংশের বেশি ছাত্রী।’’
প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও পরিকাঠামো ও পড়াশোনার গুণগত মান বজায় রাখার জন্য সবাই সচেষ্ট। জেলার সেরা স্কুলের স্বীকৃতি ওই দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিল।” নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। পুরষ্কার নিয়ে ফিরলে ওই স্কুলে গিয়ে সবার সঙ্গে আনন্দে মাতব।” স্কুল দফতর সূত্রের খবর, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতার নজরুল মঞ্চে ওই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।