ভোলবদলে ফাঁকা পাহাড়

মরসুম শেষ হওয়ার আগেই তাতে দাঁড়ি টেনে দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন দার্জিলিঙের ব্যবসায়ীরা। তা তিনি হোটেল মালিকই হোন বা ফুটপাথের হকার। সোমবার পাহাড়ে পর্যটকের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। দিনভর ম্যাল প্রায় ফাঁকা।

Advertisement

অনির্বাণ রায় ও কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ০৪:৩৮
Share:

বিদায়: ফেরার টিকিট হাতে পর্যটকেরা। দার্জিলিঙে। নিজস্ব চিত্র

মোর্চার ঘনঘন ভোলবদল দেখে দার্জিলিঙের বেশির ভাগ পর্যটক আর ঝুঁকি নিতে চান না।

Advertisement

সোমবার দুপুর থেকেই পর্যটকদের একটা অংশ বুকিং বাতিল করে পাহাড় ছাড়তে শুরু করেছেন। যাঁরা রয়ে যাচ্ছেন, তাঁরাও যথেষ্টই উদ্বেগে। শুধু কলকাতাই নয়, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, নদিয়া, বীরভূমের অন্তত তিন হাজার পর্যটক এ দিন চকবাজার থেকে ফেরার গাড়ি ধরেছেন। তবে ঝাড়গ্রামের মৃন্ময় হাজরা, তনুময় দেবের মতো অনেককে দেখা গেল চিডি়য়াখানায় ঘুরছেন। তাঁরা বললেন, ‘‘ঘুরছি ঠিকই। তবে হোটেলে বলা আছে। সঙ্গে গাড়ি রয়েছে। তেমন হলে মাঝরাতেই বেরিয়ে যেতে পারি।’’

মরসুম শেষ হওয়ার আগেই তাতে দাঁড়ি টেনে দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন দার্জিলিঙের ব্যবসায়ীরা। তা তিনি হোটেল মালিকই হোন বা ফুটপাথের হকার। সোমবার পাহাড়ে পর্যটকের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। দিনভর ম্যাল প্রায় ফাঁকা। ম্যাল মার্কেটের ব্যবসায়ী রেখা তামাঙ্গ বেশ জোরের সঙ্গেই বললেন, ‘‘আমিও গোর্খাল্যান্ড চাই। তাই বলে ছেলেমেয়েকে না খাইয়ে রাখতে পারব না। এমন ক’দিন চললে তা-ই হবে।’’

Advertisement

বিকেলে দার্জিলিঙের হিলকার্ট রোডের নামী কফি শপের ম্যানেজার জানালেন, সারা দিনে মাত্র ১২০০ টাকার বিক্রি হয়েছে। যেখানে মরসুমে দিনে গড়ে বিক্রিবাটা হয় প্রায় দেড় লক্ষ টাকার। কাছের নামী হোটেল এ দিন থেকে প্রায় পুরোপুরি ফাঁকা। তিনটে ঘরে পুলিশকর্তারা রয়েছেন। লোকসান কমাতে কর্মীদের ছুটি দিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

গাড়িচালকদের একই অবস্থা। কেউ কেউ মোর্চার সমর্থক বলে দাবি করেও বললেন, ‘‘বাপ-ঠাকুর্দারাও তিন দশক আগে নাওয়া-খাওয়া ভুলে পাহাড় অচল করেছিলেন। বহু প্রাণও গিয়েছে। কিন্তু, পাহাড়ের উন্নতি হয়নি। তাই এখন কেউ আর বন্‌ধে আগ্রহী নন।’’ সরকারি দফতরে কাজ করেন, এমন একাধিক মোর্চা সমর্থক তরুণীও বলেন, মোর্চা নেতারা রাজ্য ও কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খুঁজে বের করার কৌশল নিলে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হতো না। উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটরদের অন্যতম সংগঠন এতোয়ার সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘দার্জিলিঙের যা ক্ষতি হল, তা কবে পূরণ হবে জানি না।’’ চার মাস পরে পুজোর মরসুম। তখন কী হবে? জবাব নেই কারও কাছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement