Tourists

সামাজিক দূরত্ব শিকেয়, স্বাধীনতা দিবসে দিঘায় ভিড় পর্যটকদের

সরকারি নির্দেশিকা মেনে জুলাই মাসের গোড়াতেই দিঘার সব হোটেল এবং লজ খুলে গিয়েছিল। কিন্তু এত দিন পর্যটকের দেখা সে ভাবে মেলেনি।

Advertisement

কেশব মান্না

দিঘা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪৭
Share:

পরোয়া নেই অতিমারিকেও। স্বাস্থ্য-বিধি উড়িয়ে দিঘায় স্নানের ভিড় পর্যটকদের। নিজস্ব চিত্র

আশা জাগল স্বাধীনতা দিবসে, সঙ্গে আশঙ্কাও।

Advertisement

সৈকত সুন্দরী দিঘায় করোনা আবহের মধ্যেই শনিবার ভিড় করেছিলেন পর্যটকেরা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সমুদ্রস্নান থেকে খানাপিনা— প্রায় চেনা ছন্দে সব চলেছে শনি-রবি দু’দিন ধরে। এতে আশার আলো দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ভিড়ের মাঝে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি যে ভাবে শিকেয় উঠল, তাতে করোনা পরিস্থিতিতে আশঙ্কা থেকেই গেল। প্রশ্ন উঠল পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও।

সরকারি নির্দেশিকা মেনে জুলাই মাসের গোড়াতেই দিঘার সব হোটেল এবং লজ খুলে গিয়েছিল। কিন্তু এত দিন পর্যটকের দেখা সে ভাবে মেলেনি। প্রথম দিকে তো স্থানীয় লোকজনও বাধা দিচ্ছিলেন। ধীরে ধীরে আনলক-পর্বে অল্পসল্প পর্যটকের আনাগোনা শুরু হয়। তবে এই সপ্তাহান্তের ছুটিতে দিঘায় ভিড়ের পুরনো ছবি অনেকটাই ফিরেছে। প্রায় পাঁচ মাস বাদে সৈকত শহরের রাস্তায় সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল। হোটেল-লজগুলিতেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দিঘার হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধু শনিবারই প্রায় পঞ্চাশ হাজার পর্যটক দিঘায় এসেছিলেন। সব হোটেল ও লজে করোনার যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মানার আয়োজন করতে বলা হয়েছিল।’’

Advertisement

পর্যটকেরা অবশ্য নিয়ম-নিষেধ উড়িয়ে স্বাধীন ভাবেই ঘুরে বেরিয়েছেন। ওল্ড দিঘায় সমুদ্রস্নান বন্ধ। তাই নতুন গন্তব্য ছিল নিউ দিঘার ‘ঢেউ সাগর’। গত ডিসেম্বরে দিঘায় এসে বিজ্ঞান কেন্দ্রের পাশের স্নানঘাটের এই নামকরণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ঢেউ সাগর’ পার্কটি আমপানে তছনছ হয়েছে। তবে পার্কের ধার বরাবর স্নানের ঘাটে শনিবার ঢল নামে। স্নানের সময় ছাড়াও পথেঘাটে ভিড়ে সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না। বেশির ভাগের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। শনিবার সন্ধে নাগাদ ওল্ড দিঘায় বিশ্ববাংলা উদ্যানে বহু পর্যটককে ভিড় করে বসে সমুদ্র উপভোগ করতে দেখা গিয়েছে। করোনা বিধি উড়িয়ে সৈকতের
ধারে চুটিয়ে চলেছে মাছ ভাজা, ফুচকা বিক্রি। রবিবারও ভিড় বিশেষ পাতলা হয়নি।

দুই সন্তান এবং স্বামীর সঙ্গে কলকাতা থেকে আসা জলি সাহা বলছিলেন, ‘‘এত দিন ঘরবন্দিই ছিলাম। দিঘায় এসে একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।’’ মুখে মাস্ক ছিল না কলকাতার যুবতী মৈত্রী সরকারের। তিনি বলেন, ‘‘ভিড় অন্য বছরের মতো নয়। আর অনেক দিন বাদে বেরিয়েছি তো! নিয়মকানুন অত মাথায় ছিল না।’’

করোনা বিধি কার্যকর করতে পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগও তেমন চোখে পড়েনি। স্নানের ঘাট ও রাস্তায় পুলিশ থাকলেও নিয়ম ভাঙার জন্য কাউকে কিছু বলতে দেখা যায়নি। অথচ সামান্য দূরে উদয়পুরে ওড়িশা প্রশাসনের কড়াকড়ি ছিল। এ রাজ্যের পর্যটকদের সীমানা পেরিয়ে উদয়পুরে ঢুকতেই দেয়নি সে রাজ্যের পুলিশ। দিঘায় পর্যটকদের করোনা-বিধিভঙ্গ প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীলকুমার যাদব বলেন, ‘‘দিঘায় কোনও কন্টেনমেন্ট জ়োন নেই। তবে পর্যটকদের সচেতন করতে শুক্র ও শনিবার ৫০ হাজার লিফলেট বিলি করা হয়েছে। মাইকেও প্রচার চলেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন