পড়ুয়াদের অঙ্ক ভীতি কাটাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ

গণিতের প্রতি ভীতি কাটিয়ে আগ্রহ বাড়়াতে এই মন্ত্রই প্রধান ভিত্তি হতে চলেছে শিক্ষক শিখন কলেজগুলি (বিএড এবং ডিএলএড)-র।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫২
Share:

খেলতে খেলতে অঙ্ক শেখা।

Advertisement

গণিতের প্রতি ভীতি কাটিয়ে আগ্রহ বাড়়াতে এই মন্ত্রই প্রধান ভিত্তি হতে চলেছে শিক্ষক শিখন কলেজগুলি (বিএড এবং ডিএলএড)-র। সহজে অঙ্ক শেখার জন্য ‘আ হ্যান্ডবুক ফর ম্যাথমেটিক্স ল্যাবরেটরি’ নামের একটি বই তৈরি করেছেন স্টেট কাউন্সিল ফর এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এসসিইআরটি)। আপাতত রাজ্যের ২৮টি ডিএলএড কলেজে তা পাঠানোও হয়েছে। সরকারি স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষকদের জন্য এই পন্থা অবলম্বন করার জন্য স্কুলশিক্ষা সচিব মণীশ জৈনের কাছেও প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।

এসসিইআরটি-র গবেষক সুব্রত বিশ্বাস ওই বই তৈরি করেছেন। তিনি জানান, ওই বইটিতে ১১৪টি উদাহরণ দেওয়া রয়েছে। শুধুমাত্র রং মিলিয়ে কী ভাবে লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক (ল.সা.গু) এবং গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক (গ.সা.গু) করা যায় সেটা দেখানো হয়েছে বইতে। বীজগণিত-এর সূত্রগুলি কেন কী কারণে হচ্ছে সেটাও খোপ কাটা ছকে খেলার ছলে বোঝানো হয়েছে। উৎপাদককে দেখানো হয়েছে সরল ভাবে।
একটি বৃত্তের ক্ষেত্রফল ও কোনও মাঠের পরিসীমা সব কিছুই এঁকে হাতে কলমে শেখানোর পদ্ধতি বলা রয়েছে। এটি আপাতত করা হয়েছে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য। পরবর্তী সময়ে উচ্চমাধ্যমিকের পড়ুয়াদের জন্যও এ রকম বইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সুব্রতবাবু।

Advertisement

অঙ্ক ও ইংরেজির প্রতি পড়ুয়াদের যে ভীতি রয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে সেই তথ্য পেয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটি। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে শহরের ৮৯ শতাংশ অভিভাবক মনে করেন গণিত তাঁদের সন্তানদের কাছে একটি কঠিন বিষয়। পাশাপাশি, ৬৩ শতাংশ অভিভাবকের মতে, অঙ্ক পরীক্ষার আগে সন্তানেরা মানসিক চাপে ভোগে।

পাঠভবনের প্রধান শিক্ষিকা তথা গণিতের শিক্ষিকা শান্ত্বনা রায় বলেন, ‘‘অঙ্কের প্রতি ভীতি কাটিয়ে বিষয়কে পড়ুয়াদের কাছে আরও বেশি করে আকর্ষণীয় করে তুলতে শিক্ষকদের ভূমিকাই প্রধান। শিক্ষকেরা সেই পদ্ধতি জানলে পড়ুয়াদের তাঁরা সেভাবে শেখাতে পারবেন। তাই এই উদ্যোগ বেশ ভাল।’’ বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের গণিতের শিক্ষিকা মুক্তা সাহা বলেন,‘‘হাতে কলমে অঙ্ক করলে বিষয়টা খুব সহজ মনে হবে। ছোট থেকে অঙ্কের প্রতি ভয় যেন না তৈরি হয় তার জন্য অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।’’

শিক্ষামহলের মত, বহু পড়ুয়া অন্য সমস্ত বিষয়ে ভাল নম্বর পেলেও গণিত ও ইংরেজিতে কম নম্বর পেয়ে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে। সে কারণে ইতিমধ্যে উন্নতমানের ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ার জন্য স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার মধ্যে গণিতের প্রতি বাড়তি নজর পড়লে সমগ্র পড়ুয়াদেরই উন্নতি হবে। কিন্তু যে সমস্ত শিক্ষকেরা ইতিমধ্যে স্কুলে শিক্ষকতা করেন তাঁদের এই বই দেওয়া হবে কি?

এসসিইআরটি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘স্কুলশিক্ষা সচিবের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে অন্তত সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা যেন এই বই অনুসরণ করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন