সংরক্ষিত কামরায় বিনা টিকিটে, অভিযুক্ত তৃণমূল

শহিদ দিবসের সভায় কলকাতা আসার জন্য ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায় জোর করে উঠবার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রবিবার উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ, মালদহ ও নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে (এনজেপিতে) এই ঘটনায় ব্যাপক গোলমাল বাধে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০৩:১৩
Share:

তৃণমূলের পতাকা ও ব্যানার টাঙানো হয়েছে পদাতিক এক্সপ্রেসের কামরায়। রবিবার রাতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

শহিদ দিবসের সভায় কলকাতা আসার জন্য ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায় জোর করে উঠবার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রবিবার উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ, মালদহ ও নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে (এনজেপিতে) এই ঘটনায় ব্যাপক গোলমাল বাধে। আরপিএফ, জিআরপির সঙ্গে বচসা বাধে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদেরও। এনজেপিতে এই ঘটনার দু’ঘণ্টারও বেশি দেরিতে ছাড়ে কলকাতাগামী পদাতিক এক্সপ্রেস।

Advertisement

এ দিন রাতে সাড়ে আটটা নাগাদ পদাতিক এক্সপ্রেস এনজেপি স্টেশনে ঢোকে। তাতে সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত কামরায় প্রচুর তৃণমূল সমর্থকেরা দলীয় পতাকা, ব্যাজ লাগিয়ে জায়গা দখল করতে শুরু করলে যাত্রীদের সঙ্গে বচসা বাধে। বচসা ক্রমশ হাতাহাতিতে গড়ায়। শিয়ালদহ যাওয়ার জন্য এক যাত্রী লগ্নজিতা রায় এজেপি থেকে সংরক্ষিত কামরায় উঠে দেখেন, তাঁদের জায়গা আগে থেকেই দখল হয়ে গিয়েছে। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘প্রতিবাদ করলে আমাদের বলা হয় মানিয়ে নিতে। বহুদিন আগে টিকিট কেটে রিজার্ভেশন পেয়েছি। আমরা কেন মানিয়ে নেব?’’ অপর এক যাত্রী লতা তামাঙ্গের অভিযোগ, ‘‘বাতানুকূল কামরায় বসে আছি, এমন সময় হুড়মুড়িয়ে কয়েকজন ঢুকে পড়ল। আমাদের পাশে সরতে বলে বসে পড়ল। আমরা কিছুই বুঝতে পারলাম না। এমন অভিজ্ঞতা কখনও হয়নি।’’ এরপরে আরপিএফ কর্মীরা জোর করে তৃণমূল কর্মীদের নামিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ তাঁরা রেললাইনের উপরে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তাঁদের সেখান থেকেও হঠিয়ে দেয় জিআরপি-আরপিএফ কর্মীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, সমস্যা মেটাতে এরপর ফের আরপিএফ ও তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা ‘মানিয়ে নেওয়ার’ কথা বলে। তাতে যাত্রীরা নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে রওনা দিতে অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষকেই বুঝিয়ে ট্রেন দুঘণ্টা পর রাত ১১টা নাগাদ স্টেশন ছাড়ে। ভক্তিনগর যাত্রী ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সভাপতি দীপক মহান্তি বলেন, ‘‘যাত্রীরা বিপদে পড়লেও রেলের কোনও আধিকারিকদের দেখা মেলেনি। আমরা এ ব্যাপারে ডিআরএমের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।’’

সন্ধেয় কার্যত একই ঘটনা ঘটে রায়গঞ্জে। রাধিকাপুর থেকে নির্ধারিত সময় সন্ধে ৬টা ২৫ মিনিটে রায়গঞ্জ স্টেশনে এসে পৌঁছনো মাত্রই তৃণমূলের কয়েকশো কর্মী সমর্থক বিনা টিকিটে ওই ট্রেনের একাধিক সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়েন। যাত্রীদের একাংশ ট্রেন থেকে নেমে স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। এর পর জিআরপি ও আরপিএফ সংরক্ষিত কামরায় উঠে বিনা টিকিটের যাত্রীদের অনুরোধ করে নামিয়ে দেন। পরে তাঁরা সাধারণ কামরাতেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা হন। তবে ট্রেনটি মিনিট পনেরো দেরিতে ছাড়ে। মালদহ স্টেশনেও গৌড় এক্সপ্রেসেও তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা জোর করে উঠে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। পরে জিআরপি ও আরপিএফ মিলে জোর করে তৃণমূল সমর্থকদের নামিয়ে দিয়েই ট্রেন ছাড়ার ব্যবস্থা করেন। গন্তব্যে যেতে না পেরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের কর্মীরা। পরে জিআরপির হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ মেটে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন