বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি বাতিল, বিপাকে সংস্থা

বণ্টন সংস্থার যুক্তি, তাদের হাতেই বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। এই পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়া পাওয়ার কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের শরণাপন্ন হয়েছেন। সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ করে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিক্রির ‘লাইসেন্স’ দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

তিনটে ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট চলতি মাসেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে দেবে। বাকি দু’টি ইউনিটও এ বছরের শেষে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। কিন্তু সেই বিদ্যুতের কিছুটা আসানসোল-রানিগঞ্জ এলাকায় বিক্রি করার সুযোগ থাকলেও, বাকি বিদ্যুৎ কে কিনবে তা এখনও জানা নেই ইন্ডিয়া পাওয়ার কর্তৃপক্ষের। কারণ হলদিয়ায় এই বেসরকারি সংস্থাটি ৩৫০০ কোটি টাকা খরচ করে ৪৫০ মেগাওয়াটের যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গড়ে তুলেছে, সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি থাকলেও বছর দু’য়েক আগে তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বণ্টন সংস্থার যুক্তি, তাদের হাতেই বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। এই পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়া পাওয়ার কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের শরণাপন্ন হয়েছেন। সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ করে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিক্রির ‘লাইসেন্স’ দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে তারা। সোমবারই পূর্ব মেদিনীপুরে নন্দকুমার থেকে হলদিয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাম আমলে এই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটির জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ ১৯৮ একর জমি অধিগ্রহণ করে দেয়। এই সরকারের আমলে সংস্থাটি ১৪ একর জমি সরাসরি কৃষকদের কাছে কিনে নেয়। প্রকল্প অনুমোদনের সময়ই রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সঙ্গে ইন্ডিয়া পাওয়ার-এর চুক্তি হয়। ঠিক হয় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনে নেবে বণ্টন সংস্থা। কিন্তু সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ঘটনার পর থেকে রাজ্যে নতুন ভারী শিল্প গড়ে ওঠেনি। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে না। আবার রাজ্যের নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাও গত কয়েক বছরে অনেকখানি বেড়েছে। রাজ্যের এক বিদ্যুৎ কর্তার দাবি, ২০২০ সাল পর্যন্ত মানুষের সর্বাধিক বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়েও ১১০০-১৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকবে। এই যুক্তিতেই বণ্টন সংস্থা বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে।

প্রথম ইউনিটটির ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসানসোল-রানিগঞ্জের দিসেরগড় পাওয়ার সাপ্লাই কর্পোরেশন এলাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করবে ইন্ডিয়া পাওয়ার। কারণ তাদের হাতে সেই লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু বাকি দুটো ইউনিটের ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়েই এখন মাথাব্যথা কর্তৃপক্ষের। ইন্ডিয়া পাওয়ার-এর এক কর্তার বক্তব্য, আইনি লড়াইয়ে যাওয়া মানেই সময় নষ্ট। সুতরাং তাঁরা চান, হয় পুরনো চুক্তিটাই বহাল থাকুক, না হয় পূর্ব মেদিনীপুরে, বিশেষ করে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হোক। হলদিয়ার বহু সংস্থাই তাঁদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে চাইছে বলেই ওই কর্তার দাবি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন