অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে পাহাড়ে উঠছেন চালক। পুঁটলিতে আলু, বেগুন। এক প্যাকেটে চিনি, আর একটিতে মুসুর ডাল। কৌটোয় মাছ।
বৃহস্পতিবার থেকে টানা বন্ধ চলছে পাহাড়ে। সাধারণ মানুষের মতো সরকারি অফিসারদেরও হেঁশেলে টান পড়েছে। বাজার বন্ধ। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা সমতলের সহকর্মী, পরিচিতদের কাছে অনুরোধ করছেন, আনাজ থেকে মাছ-মাংস মায় সিগারেট পর্যন্ত কিনে পাঠিয়ে দিতে। বন্ধে পাহাড়ে গাড়ি উঠছে না। সরকারি গাড়িও কম। তাই অনেক সময় ভরসা ওই অ্যাম্বুল্যান্সই।
এক অফিসার জানান, পাহাড়ের মানুষ তা-ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সাহায্য পাচ্ছেন। কিন্তু সরকারি কর্মী-আধিকারিকেরা কী করবেন? তাই এক পদস্থ কর্তা সোমবার শিলিগুড়িতে বন্ধুর কাছে এসএমএস পাঠিয়েছেন, ‘যে করেই হোক ১ কেজি চিনি পাঠাও। আর ১ কেজি মুসুর ডাল।’ আবার এক অফিসার বন্ধুর কাছে একটু মাছ বা চিকেন পাঠাতে অনুরোধ করেছেন। রোগী নিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স শিলিগুড়ি নেমে ফেরত যাওয়ার সময়, তাতেই সে সব পাঠিয়েছেন বন্ধুটি।
আবার নিরামিষাশি এক অফিসার অ্যাম্বুল্যান্স চালকের কাছে যে ফর্দ দিয়েছেন, তাতে রয়েছে পাঁউরুটি, মাখন, ২০ প্যাকেট পনির আর ১০ প্যাকেট ডার্ক চকোলেট। এয়ারভিউ মোড় এলাকা থেকে তা কেনার পরে সেটা বাইক নিয়ে রোহিণী অবধি পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। সেখান থেকে বাইকে যাবে কার্শিয়াং। মঙ্গলবার ভোরে কার্শিয়াঙের একটি বাইক রওনা হয়ে জোড়বাংলো পৌঁছবে। সেখান থেকে দার্জিলিঙে পৌঁছবে।
কার্শিয়াঙে সমস্যা তুলনায় কম। সেখান থেকে রোহিণী হয়ে শিলিগুড়িতে নেমে ফেরা যায়। তবে কালিম্পঙেও পুলিশ বাহিনীর আনাজপাতির সমস্যা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। সেখানে পুলিশকর্মীরা পালা করে নিজেরাই রান্না করে খাচ্ছেন। সকালে ডাল-ভাত-তরকারি তো রাতে খিচুড়ি-তরকারি। আপৎকালীন পরিস্থিতি সিভিক পুলিশ থেকে আইপিএস, সকলকেই একই মেনুতে অভ্যস্ত করে দিয়েছে।