Mamata Banerjee

লরির চাকায় করোনা!

অর্থাৎ মানবদেহ বা প্রাণী দেহের কোষ চাই। সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে যে জলকণা বেরোচ্ছে তাতে সেই কোষ রয়েছে। ওই কোষগুলির মধ্যে করোনাভাইরাস রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২০ ০৫:১১
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।

ভিন্ রাজ্য থেকে আসা লরির চাকায় চলে আসছে করোনার জীবাণু! বুধবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে করোনা প্রসঙ্গে আলোচনার সময়ে এমনই ব্যাখা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

এক সময় সরকারি ভাবে করোনা-মুক্ত ছিল ঝাড়গ্রাম জেলা। তবে এখন সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে। এ দিনও জেলা করোনা হাসপাতালে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝাড়গ্রামে করোনা বৃদ্ধির কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের বলেন, ‘‘অনেকে হয়তো মানবে না, তবে করোনা এখন বায়ুবাহিত হয়ে গিয়েছে। ঝাড়গ্রামে করোনা সংক্রমণ বাড়ার অন্যতম কারণ হল ভিন্ রাজ্য থেকে আসা লরি। টোল ট্যাক্সের ওখানে লরির টায়ারগুলো ফরেন্সিক টেস্ট করে দেখুন আসছে কি না। বাজারের থলে থেকে যদি আসতে পারে, কাপড় জামা থেকে আসতে পারে। বাতাসেও আসছে। যত ক্ষণ পর্যন্ত ওষুধ না বেরোচ্ছে একমাত্র উপায় সাবধানতা অবলম্বন করা। ঝাড়গ্রামে এটা বাড়ছে তাই এখন থেকে সতর্ক হতে হবে।’’ লরিগুলিকে জীবাণুমুক্ত করা, লরির চালক-খালাসিরা যাতে নির্দিষ্ট জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাওয়াদাওয়া করেন, সেই ব্যবস্থাও করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

আইসিএমআরের এপিডেমিয়োলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়ের বিভাগীয় প্রধান সমীরণ পান্ডা অবশ্য বলছেন, ‘‘লরির চাকা থেকে ভাইরাস ছড়ায়, এটা ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া কিছু নয়। জীবন্ত কোষ ছাড়া ভাইরাস তো বাঁচে না।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, যে কোনও ভাইরাসকে বেঁচে থাকতে হলে জীবন্ত কোষ প্রয়োজন। অর্থাৎ মানবদেহ বা প্রাণী দেহের কোষ চাই। সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে যে জলকণা বেরোচ্ছে তাতে সেই কোষ রয়েছে। ওই কোষগুলির মধ্যে করোনাভাইরাস রয়েছে। বাতাসে ক্ষুদ্র জলকণা অনেক ক্ষণ ভেসে থাকতে পারে। কিন্তু অনন্তকাল ভেসে থাকবে না। ভাইরাস কখনই শুকনো পাতার মতো বাতাসে একা ঘুরে বেড়াবে না। তাই করোনা ভাইরাসকে বায়ুবাহিত রোগ বলা ঠিক হবে না। কারণ বাতাসে ধুলো ওড়ে।

Advertisement

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সের (কল্যাণী) প্রতিষ্ঠাতা তথা ন্যাশনাল সায়েন্স চেয়ার পার্থ মজুমদারের আবার ব্যাখ্যা, ‘‘লরির চাকায় লেগে থাকা মাটি থেকে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে তা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’’ পশ্চিমবঙ্গের প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলেন, ‘‘বদ্ধ ঘরে ভাইরাস ছড়ানোর প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু খোলা জায়গায় ভাইরাস বেশি ক্ষণ ভেসে থাকতে পারে না। গাড়ির চাকার মাধ্যমে বার্ড ফ্লু-র ভাইরাস এক ফার্ম থেকে আরেক ফার্মে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা নজরে এসেছে। তবে করোনাভাইরাস এ ভাবে ছড়ায় কি না আমার জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন