প্রতীকী ছবি।
রেললাইনের ধার ঘেষে হাঁটার সময়ে পিছলে রেললাইনের কাছাকাছি চলে আসেন এক মহিলা। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আর এক মহিলাও পড়ে যান। ছুটে আসা ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় দু’জনেরই। শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় বেলঘরিয়া স্টেশনের কাছে।
রেলপুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন মন্দিরা সরকার (৫০) ও তাঁর বোন শম্পা মজুমদার (৪৪)। বেলঘরিয়া যতীনদাস নগরের বাসিন্দা। মন্দিরার পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই দিদির কাছেই থাকতেন মানসিক রোগাক্রান্ত শম্পা। মাস দুই আগে তাঁদের মা মারা যান। বিকেলে বোনকে নিয়ে সিঁথির মোড়ের কাছে দন্তচিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন মন্দিরা। সেই সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। রাতে খবর পেয়ে মন্দিরার স্বামী প্রবীর সরকার ও ছেলে প্রতীক বেলঘরিয়া রেলপুলিশের দফতরে যান।
বেলঘরিয়া স্টেশন থেকে ১০০ মিটার দূরে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলের সামনে থাকা ফলের দোকানি দিলীপ সামন্ত জানান, ‘‘দু’জন মহিলা ইন্দ্রপুরীর দিক থেকে হেঁটে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে শিয়ালদহ থেকে কৃষ্ণনগরগামী গ্যালপিং ট্রেন ১ নম্বর লাইন ধরে আসছিল। ট্রেনের ধাক্কায় দু’জন ছিটকে পড়েন।’’
প্রাথমিক তদন্তে রেলপুলিশের অনুমান, রেললাইনের ধার ঘেঁষা রাস্তা ধরে হাঁটার সময়ে কোনও ভাবে রেললাইনের পাথরের উপরে পা পড়ে বেসামাল হয়ে যান এক মহিলা। তাঁকে বাঁচাতে যান অন্য জন। কিন্তু দু’জনেই টাল সামলাতে না পেরে ট্রেনের সামনে পড়ে যান। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেলঘরিয়া স্টেশনের দু’পাশে লাইনের ধারে রেলিং নেই। স্থানীয়দের একাংশ রেললাইন টপকে যাতায়াত করেন। ফুটব্রিজ ব্যবহার করেন না। অভিযোগ, গ্যালপিং ট্রেনের ঘোষণাও ঠিক মতো হয় না।
এ দিন বেলঘরিয়া স্টেশনে গিয়ে শোনা যায়, ঘোষণা করা হচ্ছে, ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ব্যারাকপুর লোকাল আসছে। কিন্তু ট্রেনটি ছিল গ্যালপিং, থামেনি।
কেন এমন হল জানতে স্টেশন সুপারইন্টেনডেন্টকে ফোন করা হলে তিনি জানান, উনি ঘটনাস্থলে নেই। বিষয়টি দেখছেন। কিছু ক্ষণ পর থেকে ঠিক মতো ঘোষণা হতে শুরু করে।
শুক্রবার টিটাগড় স্টেশনে থ্রু ট্রেনের ঘোষণা ঠিকমতো না করা নিয়ে যাত্রীদের একাংশ রেল অবরোধ করেন। রেলের তরফে ত্রুটি স্বীকার করে অভিযুক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শিয়ালদহ ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, “কর্মীদের সচেতন করা হচ্ছে। কোথাও অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।”
এ দিনই সোদপুরে কানে হেডফোন গুঁজে রেললাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় আহত হন এক তরুণী।