শুধু প্রেমিকা আকাঙ্ক্ষা নয়, আরও কিছু যুবতীকে আমেরিকায় রাষ্ট্রপুঞ্জে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়েছিল উদয়ন দাস। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় উদয়ন স্বীকার করেছে, ভোপালে সে নিজের এক বান্ধবীকে রাষ্ট্রপুঞ্জে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল সে। আকাঙ্ক্ষাকে খুন করার পর থেকেই ওই যুবতীর সঙ্গে উদয়নের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। উদয়নের ল্যাপটপে ভোপালের ওই বান্ধবীর সঙ্গে তার একাধিক ছবিও পেয়েছে পুলিশ।
এরই পাশাপাশি বর্তমানে খড়্গপুরের বাসিন্দা, আকাঙ্ক্ষার এক সহপাঠীর সঙ্গে ফোনে প্রাথমিক কথা বলে বাঁকুড়া পুলিশ জানতে পেরেছে, আকাঙ্ক্ষা খুন হওয়ার পরে গত বছর অগস্ট নাগাদ তাঁরই ফেসবুক প্রোফাইল থেকে চ্যাটে আকাঙ্ক্ষার বান্ধবীকে আমেরিকায় চাকরির বন্দোবস্ত করে দেওয়ার কথা বলা হয়। এর জন্য দিল্লি গিয়ে উদয়নের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে বলা হয় তাঁকে। তদন্তে পুলিশ দেখেছে, আকাঙ্ক্ষার অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর আরও কিছু ফেসবুক বান্ধবীকেও আমেরিকায় চাকরির জন্য দিল্লিতে গিয়ে উদয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল। আকাঙ্ক্ষার নামে উদয়নই এই কাণ্ড ঘটিয়েছিল বলে অভিমত তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আরও বিশদে জানতে খড়্গপুরের ওই যুবতীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠিয়ে বাঁকুড়ায় আসতে বলা হয়েছে। যদিও ওই তরুণীর কাছ থেকে কোনও জবাব পায়নি পুলিশ।
তদন্তকারীদের একাংশের অভিমত, উদয়ন যে বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল, তা চালিয়ে যেতে ট্যাঁকের জোর রীতিমতো ভাল থাকার দরকার। বাবা-মাকে খুন করে সম্পত্তি বিক্রি করে মোটা টাকা তার হাতে এলেও বেহিসাবি খরচে তা ফুরোতে বসেছিল। পুলিশের দাবি, আকাঙ্ক্ষাকে খুন করে আমেরিকার ভিসার জন্য দেওয়া তাঁর বাবা শিবেন্দ্র শর্মার ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে উদয়ন। একই পদ্ধতিতে আরও টাকা হাতানোর লক্ষ্যেই আকাঙ্ক্ষার বান্ধবী-সহ অনেককে আমেরিকায় চাকরির টোপ দিয়েছিল সে।
ভোপালের আরোরা কলোনির বাসিন্দা উদয়নের এক বান্ধবীর খোঁজ এখনও পায়নি বাঁকুড়া পুলিশ। আকাঙ্ক্ষা হত্যা-তদন্তে সেই বান্ধবীর কাছ থেকে কিছু সূত্র মিলতে পারে বলে তদন্তকারীদের ধারণা। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “আকাঙ্ক্ষা ছাড়াও উদয়নের আরও দুই বান্ধবীর খোঁজ আমরা পেয়েছি। ভোপাল পুলিশকে তাঁদের কথা জানিয়েছি। ওই দুই বান্ধবীর মধ্যে এক জনকেও সে আমেরিকায় চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল বলে জেরার মুখে উদয়ন জানিয়েছে।’’