মন্ত্রী উজ্জ্বল, বিশ্রামে অবনী

তিনি বৃদ্ধ হয়েছেন। অশক্ত হয়েছেন, অসুস্থও। দল অনেক দিন ধরেই ভাবছিল, এ বার তাঁকে মন্ত্রিত্বের গুরুভার থেকে অব্যাহতি দিলে ভাল হয়।ঘটনাচক্রে, সেটাই ঘটল একটা কেলেঙ্কারির পরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০২:৫০
Share:

উজ্জ্বল বিশ্বাস

তিনি বৃদ্ধ হয়েছেন।

Advertisement

অশক্ত হয়েছেন, অসুস্থও।

দল অনেক দিন ধরেই ভাবছিল, এ বার তাঁকে মন্ত্রিত্বের গুরুভার থেকে অব্যাহতি দিলে ভাল হয়।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, সেটাই ঘটল একটা কেলেঙ্কারির পরে। দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে মোবাইলে ফোন করে প্রোমোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠছিল প্রদীপ দেব ওরফে ‘পদ’ নামে সমাজবিরোধীর বিরুদ্ধে। খবরের কাগজে বেরনোর পরে নিজে গিয়ে মোবাইল উদ্ধার করেন কারামন্ত্রী অবনীমোহন জোয়ারদার।

সোমবার অবনীমোহনকে সরিয়ে কারামন্ত্রী করা হল নদিয়ারই নেতা উজ্জ্বল বিশ্বাসকে। কৃষ্ণনগর (উত্তর) কেন্দ্রের বিধায়কের থেকে মন্ত্রীর তাজ এল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়কের কাছে। রাজভবনে শপথ নিলেন উজ্জ্বল। অবনী রইলেন দফতরহীন মন্ত্রী হয়ে।

হয়তো নেহাতই সমাপতন, কিন্তু তাতে কি আর জল্পনা বন্ধ হয়! এক দিকে উজ্জ্বল-গোষ্ঠী এত উচ্ছ্বসিত যে মনে হচ্ছে, কাল থেকেই রাজ্যের সব জেল তপোবন হয়ে উঠবে। আর মদ, মোবাইল, গাঁজার পুরিয়া কিছুই ঢুকবে না। বন্দিরা সকালে উঠেই ‘এই উজ্জ্বল দিন ডাকে স্বপ্নরঙিন’ গেয়ে হাসিমুখে যে যার কাজে লেগে পড়বে।

আর, উজ্জ্বল-বিরোধীরা আনাচে-কানাচে বলছে, ‘দাদার এখন বেস্পতি তুঙ্গে। এই তো গৌরীদার (‌‌গৌরীশঙ্কর দত্ত) চাকরি খেয়ে জেলা সভাপতি হল। এখন আবার অবনীদার ভাত মেরে মন্ত্রী।’ সামনে অবশ্য কেউই এ হেন ত্যাড়াবাঁকা কিছু বলছেন না।

অবনীমোহন জোয়ারদার

সত্যি বলতে, উজ্জ্বলের মন্ত্রী হওয়া আসলে চোরকাঁটায় আটকে ছিল বহু দিন। গত সরকারে টানা পাঁচ বছর পর্যায়ক্রমে তিন দফতরে মন্ত্রী ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় তৃণমূল সরকার আসার পরে অনুগামীরা ধরেই নেয়, দাদা এ বারও মন্ত্রী হচ্ছেন। শপথের দিন তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে কৃষ্ণনগরে ফ্লেক্সও টাঙিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু শেষমেশ বাদ পড়ে যান উজ্জ্বল।

তবে কিছু দিন ধরে শোনা যাচ্ছিল, বছর ঘোরার আগেই উজ্জ্বলের কপাল খুলতে চলেছে। সম্প্রতি কৃষ্ণনগরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর মন্ত্রী হওয়ার কথা জানিয়ে যান। এ দিন শপথ নেওয়ার পরে উজ্জ্বল বলেন, ‘‘কারা দফতর নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা আছে। জেলে মোবাইল বা নেশার দ্রব্য ঢোকানো বন্ধ করব।”

অবনী-অনুগামীরা অবশ্য মানতে রাজি নন যে পদ-কাণ্ডই কাল হয়েছে। তাঁরা মনে করিয়ে দেন, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় আগেও তাঁকে কয়েক মাস দফতরহীন মন্ত্রী করে রাখা হয়েছিল। পরে কারা দফতর ফেরানো হয়। আর, জেলে মোবাইল ঢোকা তো নতুন কিছু নয়। বরং মন্ত্রী যে নিজে গিয়ে ধরেছেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর খুশি হওয়ারই কথা।

বৃদ্ধ নেতা অবশ্য এই কচকচিতে নেই। তিনি শুধু বলেন, “এ সব নিয়ে নেত্রীর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন