Ultratech Yashasvi Pradhan

কেউ জোর দিয়েছেন শিক্ষায়, কেউ রাস্তায়, যশস্বী প্রধানের জন্য ১০০ জনকে বাছল আল্ট্রাটেক, কী বলছেন তাঁরা

যশস্বী প্রধানের জন্য বাছাই করা ১০০ জন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের তালিকায় রয়েছেন হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বানিবান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সত্যজিৎ মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্বও আরও বেড়ে গেল। এই সম্মান শুধু অতীতের স্বীকৃতি নয়, ভবিষ্যতের কাজের জন্য অঙ্গীকারও বটে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫ ১৮:৫৭
Share:

প্রতীকী চিত্র

কেউ তৈরি করেছেন রাস্তা, তো কেউ বাচ্চাদের খেলার পার্ক। তাঁদের হাত ধরে গ্রামে যেমন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে, তেমনই তৈরি হয়েছে শৌচাগার। এ রাজ্যে এ রকম ১০০ জন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে বেছে নিয়েছে আলট্রাটেক পরিবার। তাঁদের মধ্যে থেকে ২০ জনকে বেছে নেওয়া হবে ‘আল্ট্রাটেক যশস্বী প্রধান’ হিসাবে।

Advertisement

যে ১০০ জনকে বাছাই করা হয়েছে, তাঁদেরই এক জন নদিয়ার রানাঘাট-১ ব্লকের অন্তর্গত পায়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফাল্গুনী বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই সম্মান শুধু আমার একার নয়। এটা পায়রাডাঙার প্রতিটি মা-বোনের, যে কৃষক ভাইয়েরা রোদে পুড়ে ফসল ফলান, সেই কিশোরী মেয়েদের জন্য, যারা আজ স্কুলে যায়। কত বাধা ছিল! লোকের কথা, রীতির বেড়াজাল! কিন্তু যখন দেখি আমাদের গ্রামে এখন মেয়েরা স্বনির্ভর গোষ্ঠী চালায়, সংসারের হাল ধরে, তখন মনে হয় এই সংগ্রাম সার্থক। আরও কাজ করে যেতে ইচ্ছে করে।’’

একই কথা বলছেন বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের সান্তোরে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ধনঞ্জয় লালও। তিনি বলেন, ‘‘আমি তো একজন সাধারণ কৃষকের ছেলে। পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছি গ্রামবাসীদের জন্য। এটা তাঁদেরই জয়।’’ প্রধান জানান, এক সময়ে বন্যা-খরায় গ্রামের ফসল নষ্ট হত। কিন্তু আজ সমবায়ের মাধ্যমে নতুন ফসল, জল সংরক্ষণ করা হয় গ্রামে। তাঁকে যে যশস্বী প্রধানের জন্য বাছাই করা হয়েছে, তা আসলে সান্তোরের কৃষক, শ্রমিকদের অদম্য মনোবলেরপ স্বীকৃতি বলেই জানিয়েছেন ধনঞ্জয়।

Advertisement

গ্রামজীবনের উন্নয়নে সক্রিয় ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। চালু করেছিলেন ‘পিএম টু ডিএম’। যাতে কেন্দ্রের টাকা সরাসরি গ্রামে পৌঁছোতে পারে। সেই উদ্যোগকে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী’ বলে দাগিয়ে দিয়ে তার বিরোধিতা হয়েছিল। তার পর রাজনীতির জল বহু দূর গড়িয়েছে। কেন্দ্র এবং রাজ্যে সরকার বদলেছে। এখন অবশ্য সব পক্ষই মনে করে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন ভীষণ ভাবেই জরুরি। তাই কেন্দ্র থেকে এখন সরাসরি পঞ্চায়েতে টাকা আসে। রাজ্যও নিজের মতো করে অর্থ বরাদ্দ করে। যাতে দ্রুত কার্যকর করা যায় উন্নয়নের রূপরেখা।

সেই পথে হেঁটেই গ্রামে পাকা রাস্তা বানিয়েছেন মুর্শিদাবাদের লালগোলার যশাইতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাফিনা বিবি। পাশাপাশি, কাজ করেছেন নারীশিক্ষার উন্নতিতেও। রাফিনা বলেন, ‘‘নাবালিকাদের বিয়ে আটকানো আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে অভিভাবকদের মত বদলাতে পেরেছি। আমার লক্ষ্য ছিল— গ্রামের প্রতিটি শিশু যেন স্কুলে যায়, বিশেষ করে মেয়েরা। আজ যখন দেখি গ্রামের মেয়েরা কলেজে যায়, কম্পিউটার শেখে, তখন সব কষ্ট ভুলে যাই। ওদের জন্যই আরও কাজ করতে ইচ্ছে করে।’’

যশস্বী প্রধানের জন্য বাছাই করা ১০০ জন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের তালিকায় রয়েছেন হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বানিবান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সত্যজিৎ মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্বও আরও বেড়ে গেল। এই সম্মান শুধু অতীতের স্বীকৃতি নয়, ভবিষ্যতের কাজের জন্য অঙ্গীকারও বটে।’’

কালিম্পঙের বং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেবিনা লেপচা মনে করেন, ‘যশস্বী’ হওয়া শুধু নিজের জন্য নয়, নিজের শিকড়কে সমৃদ্ধ করাও। রেবিনার কথায়, ‘‘এটা আমার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়। এটা আমার সম্প্রদায়, বং গ্রামের প্রতিটি মানুষ এবং আমাদের লেপচা সংস্কৃতির জয়। আমাদের সংগ্রাম অনেকের থেকে আলাদা। এই সম্মান আমাদের ঐতিহ্যকে বাইরের দুনিয়ার কাছে তুলে ধরার সুযোগ করে দেবে। প্রেরণা দেবে পাহাড়ের প্রতিটি মেয়েকে।’’

যে সব গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের হাত ধরে গ্রামের সর্বাঙ্গীন ও পরিকাঠামোগত বিকাশ হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে থেকে আল্ট্রাটেক সিমেন্ট পরিবার বেছে নেবে ‘আল্ট্রাটেক যশস্বী প্রধান’। আল্ট্রাটেক সিমেন্ট দেশ জুড়ে এই বিকাশ ও নির্মাণকার্যে সহযোগিতা করে চলেছে। নিজেদের এই অভিজ্ঞতা, গুণমান এবং বিশ্বস্ততাকে পাথেয় করে পশ্চিমবঙ্গেও সকল গ্রাম প্রধানদের সার্বিক উন্নয়নের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই সংস্থা। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন আনন্দবাজার ডট কমে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement