Visva Bharati University

রাস্তার দাবিতে অবস্থান, গণস্বাক্ষর বিশ্বভারতীর 

এ দিন সকালে শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় এক ঘণ্টার প্রতীকী অবস্থানে বসেছিলেন উপাচার্য, কর্মী, আধিকারিক ও অধ্যাপকদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩৫
Share:

উপাসনাগৃহের সামনের রাস্তায় বিজেপির পোস্টার, পতাকা। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা ফিরে পেতে ছাতিমতলার প্রতীকী অনশন সেরে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গণস্বাক্ষর করা চিঠি পাঠাল বিশ্বভারতী। আবার ওই দিনই শান্তিনিকেতনের কাচমন্দির থেকে কালিসায়র মোড় পর্যন্ত সেই রাস্তাতেই দেখা গেল বিজেপির পতাকা। শুধু পতাকা নয়, উপাচার্যের সমর্থনে ছিল পোস্টারও। তাতে লেখা, ‘উপাচার্যের আহ্বানে দলে দলে সামিল হন’, ‘উপাচার্যের নেতৃত্বে লড়ছি, লড়ব’। পতাকা চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা খুলে নেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকর্মীরা। ছিঁড়ে ফেলা হয় পোস্টারও। কিন্তু, তাতে বিতর্ক থামেনি।

Advertisement

এ দিন সকালে শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় এক ঘণ্টার প্রতীকী অবস্থানে বসেছিলেন উপাচার্য, কর্মী, আধিকারিক ও অধ্যাপকদের একাংশ। তার পরেই ৩৮০ জনের স্বাক্ষর করা চিঠি পাঠানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। ওই একই সময়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে ছাতিমতলার বাইরে একাধিক দাবিতে টানা বিক্ষোভ দেখায় বিশ্বভারতী ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিরা। ওই সময়ে তৃতীয় কর্মসূচি ছিল ব্যবসায়ী সমিতির। ২০১৯ সালের পৌষমেলার সিকিউরিটি মানি ফেরত পাওয়ার দাবিতে উপাসনা মন্দিরের সামনে মৌন অবস্থানে বসেছিলেন তাঁরা।

২৮ ডিসেম্বর বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রায় তিন কিলোমিটারের ওই রাস্তাটি বিশ্বভারতীর থেকে রাজ্য পূর্ত দফতর (সড়ক) ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে ঘোষণা করেন। যে রাস্তা এক সময় বিশ্বভারতীর অনুরোধে তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল রাজ্য, তা ফেরানোর সিদ্ধান্ত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় টানাপড়েন। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, ১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাস্তা ফেরানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি রেখেছিলেন। কিন্তু, সেই চিঠির কোনও উত্তর আসেনি বলেই দাবি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

এমন আবহে রাস্তা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে অবস্থানে বসার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর গণ আবেদনপত্রে প্রধানত দুটি অসুবিধার উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমটি হল, ভারী যানবাহন চললে তার কম্পনে ক্ষতি হবে রাস্তার দু’ধারের প্রাচীন স্থাপত্য, ভাষ্কর্যগুলির। যদিও, রাস্তার দায়িত্ব ফিরিয়ে নেওয়ার দিনেই জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছিলেন, এই রাস্তায় ভারী যান চলাচল আগের মতো বন্ধ থাকবে। দ্বিতীয় অসুবিধার দিকটি হল, শিশু পড়ুয়াদের নিরাপত্তা।

এ দিকে, বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে বিজেপি-যোগের অভিযোগ তুলে বরাবরই সরব তৃণমূল। এমন রাস্তায় বিজেপির পতাকা ও উপাচার্যের সমর্থনে পোস্টার দেখে বিশ্বভারতীর কর্মীসভার প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা গগন সরকার বলছেন, ‘‘উনি যে বিজেপির লোক তা আরও একবার প্রমাণ হল।’’ বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক তথা বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার অভিযোগ এটা তৃণমূলের কারসাজি। তাঁর দাবি, “এই ঘটনায় বিজেপির কেউ যুক্ত নন। ক্যাম্পাসের মধ্যে তৃণমূল পতাকা লাগিয়ে স্লোগান দিয়ে সমালোচিত হয়েছিল বলেই এখন আমাদের পতাকা, পোস্টার লাগিয়ে বদনাম করতে চাইছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন