মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার পরেও টাকা ফেরত দিতে টালবাহানার অভিযোগ তুলে সোমবার বিকেলে কোচবিহারের দিনহাটায় অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে। আমানতকারীরা জানিয়েছেন, সাত দিনের মধ্যে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা না করা হলে পুলিশ ও মহকুমাশাসকের দফতরে অভিযোগ জানাবেন তাঁরা। রোজভ্যালি কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা সকলের টাকা খুব শীঘ্রই মিটিয়ে দেবেন।
সাত বছর ধরে দিনহাটায় ব্যবসা শুরু করেছে রোজভ্যালি। মহকুমার গোপালগরে তাদের অফিস রয়েছে। সংস্থার কর্তৃপক্ষ জানান, দিনহাটায় তাঁদের দশ হাজারের উপর আমানতকারী রয়েছেন। এজেন্টের সংখ্যাও পাঁচ শতাধিক। এ দিন কয়েকশো আমানতকারী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। বড় বোয়ালমারির এক জন আমানতকারী সবিতা দাস জানান, তিনি পরিচারিকার কাজ করে যে টাকা রোজগার করেছেন, তার বেশিরভাগ রোজভ্যালিতেই রেখেছেন। তিনি বলেন, “মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার পরেও টাকা পাচ্ছি না। নয় মাস ধরে ঘোরানো হচ্ছে আমাকে।”
দিনহাটার মহকুমাশাসক কাজল সাহা জানান, ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে মৌখিক ভাবে তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমানতকারীরা অভিযোগ জানালে আইন মেনে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।” দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী জানিয়েছেন, টাকা ফেরতের ব্যবস্থা না করা হলে তাঁরা পথে নেমে আন্দোলন করবেন।
কলকাতায় রোজ ভ্যালি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা গ্রাহকদের টাকা নিয়মিত মিটিয়ে দিচ্ছেন। কিছু কিছু জায়গায় টাকা মেটাতে দেরি হচ্ছে, দিনহাটা তার মধ্যে একটি। তাঁরা জানান, তবে তাঁদের কাছে খবর রয়েছে, স্থানীয় কিছু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য লগ্নিকারীদের সংস্থার অফিস ভাঙচুর করতে প্ররোচিত করছেন।
ওই সংস্থার দিনহাটা শাখার সিনিয়র ম্যানেজার নবনীতা অধিকারী টাকা ফেরত দিতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন। এখনও যে বাজার থেকে টাকা তোলা হচ্ছে, সে কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, “লগ্নিকারী সংস্থা নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠার পর থেকে আমাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় থাকা সম্পত্তিও সরকারের অধীনে রয়েছে। সে জন্যই আমরা টাকা ফেরত দিতে পারছি না।” তবে কিছু কিছু করে টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।